২৭১ বধ্যভূমি নির্মাণে একনেকে ৪৪২ কোটি টাকার প্রকল্প পাস
মহান মুক্তিযুদ্ধের ২৭১টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও সেখানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে। এ জন্য ৪৪২ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। গত জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০২১ সালের জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। শেরেবাংলা নগরের পরিকল্পনা কমিশনের এনইসির সম্মেলনকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, আগামী প্রজন্ম যাতে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে, সে জন্য এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। কয়েক বছর আগে এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে সারা দেশের ৩৫ বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছিল। পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রথম পর্যায়ের প্রকল্পটির ওপর পরিদর্শন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ওই সময়ে সংরক্ষণ করা প্রায় সব বধ্যভূমির বেহাল দশা। এখন নতুন করে আবার প্রকল্প নেওয়া হলো।
সম্পূর্ণ দেশজ অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। বধ্যভূমিগুলো চিহ্নিত করে সেখানে অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি বেষ্টনী নির্মাণ করা হবে। শহীদদের নামের তালিকাও টাঙানো হবে।
প্রকল্পটিসহ আজকের একনেক সভায় মোট ১৭ হাজার ৭৮৭ কোটি টাকার ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে স্থানীয় মুদ্রায় দেওয়া হবে ১৩ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা। আর বিদেশি সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে ৩ হাজার ৯৩১ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা দেবে ৪৩ কোটি টাকা।
একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো, ৪ হাজার ৮২০ কোটি টাকার রুরাল ট্রান্সপোর্ট ইম্প্রুভমেন্ট প্রকল্প; ১০২ কোটি টাকার পটুয়াখালী জেলার লোহালিয়া নদীর ওপর নির্মাণাধীন পিসি গার্ডার সেতুর অসমাপ্ত নির্মাণকাজ সমাপ্ত করা; ২৯১ কোটি টাকার ফরিদপুর জেলার আড়িয়ল খাঁ নদের তীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিং; ৭০ কোটি টাকার নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম ও চাঁদপুর কৃষি উন্নয়ন; ১ হাজার ৪২১ কোটি টাকার চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন; ৫২ কোটি টাকার বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) সম্প্রসারণ ও শক্তিশালী করা; ৪৮০ কোটি টাকার পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন; ৭৫ কোটি টাকার সাভারের পরমাণু গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ৩ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন গবেষণা রিঅ্যাক্টর ফ্যাসিলিটির সেফটি সিস্টেমের সমন্বয় সাধন, আধুনিক করা, রক্ষণাবেক্ষণ ও বর্ধিত করা; ১ হাজার ১৩৬ কোটি টাকার আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারি; ৬১৩ কোটি টাকার জামালপুর জেলার আটটি পৌরসভার ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন; ৭৯ কোটি টাকার রাজশাহী ওয়াসার ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগারের জন্য জমি অধিগ্রহণ; ৬০৭ কোটি টাকার পুরোনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ইতিহাস, ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণ ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়ন; ৩৪৭ কোটি টাকার পাচুরিয়া-ফরিদপুর-ভাঙ্গা-রেলপথ পুনর্বাসন ও নির্মাণ; ৩৩২ কোটি টাকার জামালপুর-ধানুয়া-কামালপুর-রৌমারী-দাঁতভাঙ্গা জেলা মহাসড়ক প্রশস্ত ও মজবুত করা; ৮০ কোটি টাকার বাংলাদেশের ১৩টি নদীবন্দরে প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার শক্তিশালী করা; ৫ হাজার ৯১৮ কোটি টাকার নির্বাচিত মাদ্রাসাসমূহের উন্নয়ন এবং ৯২০ কোটি টাকার বরিশাল বিভাগ পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।
একনেক সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।