শ্রীলঙ্কায় বেক্সিমকো ফার্মার বিনিয়োগের পথ সহজ হলো
দেশের ওষুধ খাতের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড শ্রীলঙ্কায় যৌথ বিনিয়োগে যাবে বলে প্রায় চার বছর ধরে বলে আসছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে একবার বেক্সিমকো ফার্মাকে বিনিয়োগের অনুমোদনও দিয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রস্তাবটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সরকার তথা অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কাছে পাঠালে সেখানে তা আটকে যায়। আইন, বিধিমালা বা নীতিমালা না থাকার কথা বলে সরকার শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবটি এত দিন চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করেনি। ১৬ জানুয়ারি দেশে মূলধনি হিসাব লেনদেন (বিদেশে ইক্যুইটি বিনিয়োগ) বিধিমালা, ২০২২ জারি হওয়ায় অবশেষে শ্রীলঙ্কায় বেক্সিমকো ফার্মার বিনিয়োগের পথ খুলে গেছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ্ বলেন ‘এখন থেকে বিধিমালা অনুযায়ীই বিদেশে বিনিয়োগ করতে হবে।’ আগের কোনো বিষয় নিয়ে কিছু বলতে পারছেন না বলে জানান তিনি।
বেক্সিমকোর আবেদনে বলা হয়েছিল, শ্রীলঙ্কায় ওষুধ কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে স্টেট ফার্মাসিউটিক্যালস ম্যানুফ্যাকচারিং করপোরেশন অব শ্রীলঙ্কার (এসপিএমসি) সঙ্গে তারা চুক্তি করেছে। চুক্তি অনুযায়ী ওই কোম্পানিতে বেক্সিমকো ফার্মার ৭০ শতাংশ, এসপিএমসির ১০ শতাংশ ও শ্রীলঙ্কার স্থানীয় উদ্যোক্তাদের ২০ শতাংশ শেয়ার থাকবে।
২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল বেক্সিমকো ফার্মা ৬০ লাখ ডলার অর্থাৎ ৫০ কোটি টাকা জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কায় বিনিয়োগ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করে। এতে বলা হয়, শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশি ওষুধের বাজার ভালো। কিন্তু ২০১৫ সালে দেশটির সরকার ওষুধ আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রস্তাবিত কোম্পানির নাম দেওয়া হয় ‘বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস সিলন (প্রাইভেট) লিমিটেড’ বা বিপিসিএল। বাংলাদেশ ব্যাংক শর্তসাপেক্ষে শ্রীলঙ্কায় বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত দেয়।
শর্তগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে বিপিসিএল কোনো ধরনের ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড ঋণ সুবিধা নিতে পারবে না। বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার হস্তান্তর বা বিক্রি করতে কিংবা বিনিয়োগ অবলুপ্ত করতে চাইলেও তা বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে।
বেক্সিমকো ফার্মা সরকারকে জানিয়েছিল, ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার বাজারে বাংলাদেশ যে ৯০ লাখ ডলারের ওষুধ রপ্তানি করেছে, তার মধ্যে তাদের একার অংশই ২৩ লাখ ডলার।
এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান ও বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসানের সঙ্গে গতকাল মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। খুদে বার্তা দিয়ে জানতে চাইলেও জবাব দেননি তাঁরা।