শেয়ারের দামে আবার লাগাম, পতন থামাতে পারবে কি
আবারও শেয়ারের দাম কমার লাগাম টেনে ধরল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এখন থেকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম এক দিনে ২ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না। কারণ, শেয়ারের দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা বা সার্কিট ব্রেকার বেঁধে দেওয়া হয়েছে ২ শতাংশে। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত এ সীমা সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ ছিল।
এর আগে শেয়ারবাজারের পতন ঠেকাতে ২০২০ সালের ১৯ মার্চ শেয়ারের দামের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
শেয়ারবাজারের বড় ধরনের পতন ঠেকাতে গতকাল এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এর আগে শেয়ারবাজারের পতন ঠেকাতে ২০২০ সালের ১৯ মার্চ শেয়ারের দামের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়ার আগের দিন অর্থাৎ ১৮ মার্চ প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩ হাজার ৬০৩ পয়েন্টে নেমে গিয়েছিল। সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বেঁধে দেওয়ার কারণে ১৯ মার্চ ডিএসইএক্স সূচকটি এক দিনেই ৩৭১ পয়েন্ট বেড়েছিল। মূল্যস্তর বেঁধে দেওয়ার মাধ্যমে ওই সময় কৃত্রিমভাবে শেয়ারবাজারের বড় ধরনের পতন ঠেকানো হয়।
এরপর গত বছরের এপ্রিল ও জুনে দুই ধাপে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়। তার বদলে কিছুসংখ্যক কোম্পানির ক্ষেত্রে এক দিনে শেয়ারের দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশের বদলে ২ শতাংশ বেঁধে দেওয়া হয়। একই বছরের ১৭ জুন শেয়ারের দামের উত্থান-পতনের সীমা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়। এর পর থেকে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কমতে বা বাড়তে পারে।
গতকাল লেনদেন শুরুর প্রথম ঘণ্টার মধ্যেই ১৩৮ পয়েন্ট কমে যায় ডিএসইএক্স সূচকটি। তাতে বাজারে আবারও বড় ধরনের দরপতনের আশঙ্কা তৈরি হয়। এর মধ্যে দুপুরের দিকে বাজারে ছড়িয়ে পড়ে, শেয়ারের দরপতনের লাগাম টানতে নতুন করে আবারও সীমা বেঁধে দিচ্ছে বিএসইসি। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সূচক বাড়তে শুরু করে
এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারি থেকে শেয়ারবাজারে দরপতন শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার এক দিনেই ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৮২ পয়েন্ট বা পৌনে ৩ শতাংশ কমে সাড়ে ৬ হাজার পয়েন্টের মনস্তাত্ত্বিক সীমার নিচে নেমে যায়। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যেও দেখা দেয় উদ্বেগ। এমন এক পরিস্থিতিতে গতকাল লেনদেন শুরুর প্রথম ঘণ্টার মধ্যেই ১৩৮ পয়েন্ট কমে যায় ডিএসইএক্স সূচকটি। তাতে বাজারে আবারও বড় ধরনের দরপতনের আশঙ্কা তৈরি হয়। এর মধ্যে দুপুরের দিকে বাজারে ছড়িয়ে পড়ে, শেয়ারের দরপতনের লাগাম টানতে নতুন করে আবারও সীমা বেঁধে দিচ্ছে বিএসইসি। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সূচক বাড়তে শুরু করে। দিন শেষে ডিএসইএক্স সূচকটি আগের দিনের চেয়ে ১৭ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন শেষ হয়। লেনদেন শেষে শেয়ারের দামের কমার সর্বোচ্চ সীমা কমিয়ে ২ শতাংশ নির্ধারণের আদেশ জারি করা হয়।
কয়েকজন বিনিয়োগকারী জানান,বিএসইসির এ সিদ্ধান্তের ফলে বাজারে ঋণগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের ফোর্সড সেল বা জোরপূর্বক বিক্রির আতঙ্ক কিছুটা হলেও কমবে।
এ আদেশ জারির পর গতকাল ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের একাধিক বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএসইসির এ সিদ্ধান্তে তারা আপাতত স্বস্তিবোধ করছেন। তাঁদের ধারণা, বিএসইসির এ সিদ্ধান্তের ফলে বাজারে ঋণগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের ফোর্সড সেল বা জোরপূর্বক বিক্রির আতঙ্ক কিছুটা হলেও কমবে। এখন দেখার বিষয়, বিএসইসির নতুন এ সিদ্ধান্ত বাজারে পতন ঠেকাতে পারে কি না। এ জন্য অপেক্ষা করতে হবে আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত। কারণ ১০টায় শুরু হবে শেয়ারবাজারের দিনের লেনদেন।