রোজায় বেড়েছে জুড়ীর ‘মিষ্টি চাঁপা’ কলার কদর
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার বিভিন্ন টিলায় স্থানীয় জাতের ‘মিষ্টি চাঁপা’ কলার আবাদ হচ্ছে অনেক দিন ধরেই। বারো মাসই এ কলার ফলন হয়। তবে রোজায় এসব কলার চাহিদা বেড়েছে। এখানকার কলা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে। জুড়ীর অনেক পরিবার এ কলা চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে।
সপ্তাহের প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার উপজেলা সদরের কামিনীগঞ্জ বাজারে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের ফলের হাট বসে। এর মধ্যে কলাই বেশি থাকে। ভোর থেকেই হাট জমে ওঠে। আশপাশের বিভিন্ন এলাকার পাইকারেরা সেখান থেকে কলাসহ অন্যান্য ফল কিনে নিয়ে যান।
সম্প্রতি এক সকালে দেখা যায়, বাজারে সড়কের দুই পাশে কয়েক হাত পরপর কাঁচা-আধা পাকা কলার ছড়ির স্তূপ। ক্রেতাদের সঙ্গে পাইকারদের দরদাম চলছে। কেউ কেউ কিনে পিকআপ ভ্যান বা অটোরিকশায় বোঝাই করে গন্তব্যে ছুটছেন।
চাষিরা জানান, জুড়ীতে সারা বছরই কলার উৎপাদন হয়। এর মধ্যে চাঁপা ও মিষ্টি চাঁপা কলার চাষ বেশি হয়। উপজেলার পূর্ব জুড়ী ও গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের টিলা এলাকায় কলার বেশি চাষ হয়। দুই জাতের কলাই আকারে ছোট। তবে চাঁপা কলার স্বাদ একটু টক-মিষ্টি আর মিষ্টি চাঁপা পুরোটাই মিষ্টি। রোজায় মিষ্টি চাঁপা কিনতে পাইকারদের আগ্রহ বেশি থাকে। তাই চাষিরা রোজার আগে এ জাতের কলা বেশি উৎপাদন করেন।
কচুরগুল গ্রামের কলাচাষি উকিল মিয়া বলেন, ভোরে ৩০ ছড়ি মিষ্টি চাঁপা কলার ছড়ি নিয়ে আসেন। এর মধ্যে ২০টি ছড়ি ৯ হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে গেছে। রোজার সময় দাম কিছুটা বেশি পাওয়ায় তিনি খুশি। জোর গলায় বলেন, এখানকার কলা চাষে কোনো রাসায়নিক সার, কীটনাশক লাগে না। প্রাকৃতিকভাবেই কলার ফলন হয়।
পার্শ্ববর্তী কুলাউড়া উপজেলা থেকে কলা কিনতে আসা পাইকার গোপীনাথ দাস বলেন, খোলাবাজারে জুড়ীর মিষ্টি চাঁপা কলার চাহিদা আছে। আর রোজায় ইফতার ও সাহ্রিতে কলার চাহিদা থাকে বেশি। তিনি ৯ হাজার টাকায় ছোট-বড় ৩০ ছড়ি কলা কিনেছেন।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, জুড়ীর টিলা এলাকায় দোঁআশ ও বেলে-দোঁআশ মাটিতে চাঁপা এবং চিনি চাঁপা কলার ব্যাপক চাষ হয়। চিনি চাঁপা কলাকে এখানে সবাই মিষ্টি চাঁপা কলা বলেন।
জুড়ীর এ কলাচাষিরা কলার পাশাপাশি কমলা ও বাতাবিলেবু চাষ করছেন।