দেশের বাজারে ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে মুরগির মাংসের দাম। ঢাকার কারওয়ান বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১৬৫-১৭০ টাকা চাওয়া হয়। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তালিকা অনুযায়ী, গত বছর এ সময়ে প্রতি কেজি মুরগি ১২০-১৩৫ টাকার মধ্যে ছিল।
ব্রয়লারের পাশাপাশি ফার্মের কক মুরগির দামও বেড়েছে। চড়া দেশি মুরগির দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে এক দিনের মুরগির বাচ্চার দাম অনেক বেড়ে গেছে। পাশাপাশি মুরগির সরবরাহ কম। এ কারণে দাম চড়া।
বাজারের মুরগির পাশাপাশি ডিম, মাছ ও সবজির দামও বাড়তি। গত সপ্তাহে বেড়েছিল ভোজ্যতেলের দাম। সব মিলিয়ে মানুষের খরচ বেশ কিছুটা বেড়ে গেছে।
ঢাকার মিরপুরে গতকাল সকালে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। বিকেলে কারওয়ান বাজারে একই মুরগির দাম চাওয়া হয় ১০ টাকা বেশি। জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের মুরগি বিক্রেতারা বলেন, ছোট মুরগি তাঁরা ১৭০ টাকা চাইছেন। আর বড় ব্রয়লার মুরগি ১৬৫ টাকায় বিক্রি করছেন। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় প্রতিনিয়ত দামে পরিবর্তন আসছে।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো. ইসমাইল বলেন, তিনি প্রতিটি ৮০০ গ্রামের কাছাকাছি ওজনের কক মুরগি বিক্রি করছেন ২৪০-২৫০ টাকা দরে। এই দর স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৫০ টাকার মতো বেশি। তিনি বলেন, এখন সামাজিক উৎসব ও বনভোজনের কারণে মুরগির চাহিদা বেশি। সে অনুযায়ী সরবরাহ নেই।
গাজীপুরের শ্রীপুরের খামার মালিক ও পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মো. মহসিন প্রথম আলোকে বলেন, হ্যাচারিগুলো এখন প্রতিটি এক দিনের ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম ঠিক করেছে ৮২ টাকা। পয়লা বৈশাখ ও পবিত্র শবে বরাত সামনে রেখে বাড়তি চাহিদার কারণে তাঁরা এই চড়া দাম নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তিনি বলেন, খামার পর্যায়ে এখন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৩২ টাকা দরে বিক্রি হয়। এটা খুচরায় ১৬৫ টাকা হওয়া গ্রহণযোগ্য নয়।
ফার্মের ডিমের দাম কয়েক সপ্তাহ ধরেই চড়া। ঢাকার বাজারে এখন প্রতি ডজন (১২ টি) ফার্মের মুরগির ডিম ১০৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা দোকানে প্রতি হালি ডিম কিনতে লাগছে ৩৫-৩৬ টাকা।
এখন শীতের সবজি শেষের পথে। নতুন করে আসছে গ্রীষ্মের সবজি। দামও কিছুটা বেশি। এখন করলা, চিচিঙ্গা, ঢ্যাঁড়স, বরবটি ইত্যাদি সবজি প্রতি কেজি ৬০-৮০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা। বেগুন, পটোল, কচুর লতি, শিম পাওয়া যাচ্ছে ৪০-৬০ টাকায়।
শীত শেষে মাছের সরবরাহও কমেছে। ফলে দাম বাড়তি। বিক্রেতারা বলছেন, যেকোনো মাছ কিনতেই ১০-২০ শতাংশ বাড়তি দাম লাগছে।
নিয়মিত পরিবারের কাঁচাবাজারের কেনাকাটা সারেন আগারগাঁওয়ের মইনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এক কেজি আইড় মাছের দাম চায় ৯০০ টাকা। চিংড়ির কেজি ৭৫০ টাকা। ইলিশের কেজি ১ হাজার ২০০ টাকা। বোয়াল কিনতে গেলাম, তাও কেজি ৬৫০ টাকা। আসলে চাষের কই আর পাঙাশ ছাড়া কোনো মাছই কেনার উপায় নেই।’