আরও পতন ঠেকাতে নীতি সুদহার বাড়াল রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক

রাশিয়ার মুদ্রা রুবল

পশ্চিমের দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার ফল পেতে শুরু করেছে রাশিয়া। ইতিমধ্যে দেশটির মুদ্রা রুবলের মান ৩০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মুদ্রা সরবরাহের রাশ টেনে ধরতে নীতি সুদহার দ্বিগুণ করেছে ব্যাংক অব রাশিয়া—৯ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে একলাফে ২০ শতাংশে উঠেছে সুদহার।

এদিকে যুদ্ধের আঁচ অন্যান্য দেশেও লেগেছে। লন্ডনের এফটিএসই ১০০ শেয়ার সূচক ১ শতাংশের বেশি পড়েছে আর প্যারিস ও ফ্রাঙ্কফুর্টের শোয়ার সূচকের পতন হয়েছে ২ শতাংশ। তেলের দাম যুদ্ধের শুরুতেই ১০৫ ডলারে ওঠার পর আবার কিছুটা কমেছিল। সেই তেলের দামও আজ ৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়েছে। এই প্রতিবেদন লেখার সময় ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ছিল প্রতি ব্যারেল ১০২ দশমিক ৫৯ ডলার।

এ ছাড়া অনিশ্চয়তার সময় যা হয়, এবারও তা-ই হচ্ছে, নিরাপদ বিনিয়োগের লক্ষ্যে মানুষ স্বর্ণ ও মার্কিন ডলারের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ফলে এসবের দাম বেড়েছে।

মুদ্রার মান আর যাতে না পড়ে, সে লক্ষ্যে রুশ সরকার দ্রুত নীতি সুদহার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুদ্রার মান কমে গেলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ও সঞ্চয় কমে যায়।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার কিছু ব্যাংককে আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থা থেকে বিযুক্ত করার পরিণতিতে রুবলের মান এতটা পড়েছে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। এই দেশগুলো রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক, রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ তহবিল ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে।

গত বৃহস্পতিবার আর্থিক নিষেধাজ্ঞায় মানুষকে ভীত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারা বলেছিল, আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষার মতো প্রয়োজনীয় সম্পদ তাদের হাতে আছে।

বিষয়টি হচ্ছে, যুদ্ধের মতো অনিশ্চিত সময়ে মানুষ সাধারণ ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেয়। সম্প্রতি তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পরও একই দৃশ্য দেখা গেছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, রাশিয়ার রাজধানী মস্কো শহরে এটিএম বুথের সামনে মানুষের দীর্ঘ সারি। তাদের মনে ভীতি, এটিএম কার্ড হয়তো আর কাজ করবে না বা অর্থ উত্তোলনের ওপর সীমা আরোপ করা হবে।

গত সপ্তাহে রাশিয়ার এটিএম বুথে অর্থ সরবরাহ বাড়াতে বাধ্য হয়েছিল দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর দেশটিতে নগদ অর্থের চাহিদা সর্বোচ্চ জায়গায় পৌঁছে।

এদিকে আরও কিছু সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রাশিয়ার বিভিন্ন বিনিয়োগ তহবিল থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যেন বিনিয়োগ তুলে নিতে না পারেন, সে লক্ষ্যে ব্রোকারদের নির্দেশ দিয়েছে তারা।

এ ছাড়া বিদেশি মুদ্রা ও অর্থ বাজার ছাড়া অন্যান্য বাজার খুলে দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে তারা এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।