মুঠোফোনে কথা বলতে বাড়তি কর দিতেই হচ্ছে
আগামী ২০২০–২১ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে মুঠোফোন সেবার ওপর যে বাড়তি করারোপ করা হয়েছিল, সংশোধনীকালেও তাতে কোনো ছাড় দেয়নি সরকার। ফলে মুঠোফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারে গ্রাহককে বাড়তি কর দিতেই হচ্ছে।
জাতীয় সংসদে আজ সোমবার অর্থবিল ২০২০ পাস হয়। এতে মুঠোফোন ব্যবহারের কর–সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। এর আগে ১১ জুন মোবাইল সেবায় সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল যেদিন বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন, সেদিন রাত থেকেই নতুন করহার কার্যকর করে মোবাইল অপারেটরগুলো।
সব মিলিয়ে এখন প্রতি ১০০ টাকা রিচার্জ করে কথা বলা ও খুদে বার্তায় সরকার ২৫ টাকার মতো কর পাবে। ইন্টারনেট ব্যবহারে ১০০ টাকায় সরকার পাবে ১৮ টাকার মতো। কথা বলায় বাড়তি কর নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আপত্তি ছিল। অপারেটররাও এ কর কমানোর জোর দাবি জানিয়েছিলেন।
বাজেট প্রতিক্রিয়া জানাতে গত ১৬ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটার্স অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) পক্ষ থেকে বলা হয়, মোবাইল সেবায় কর বাড়ানোয় সাধারণ মানুষ ব্যবহার কমিয়ে খরচ কমাবে। এতে এ খাত থেকে সরকারের বাড়তি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য পূরণ না–ও হতে পারে।
অ্যামটবের মহাসচিব এস এম ফরহাদ ওই দিন বলেন, দেশের ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ মানুষের স্মার্টফোন নেই। তাঁরাই মূলত বেশি চাপে পড়বেন। করোনা পরিস্থিতিতে তাঁদের বেশির ভাগের পক্ষে ব্যবহার কমিয়ে খরচ কমানো ছাড়া উপায় থাকবে না।
সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর ফলে মোবাইলে কথা বলা ও খুদে বার্তা পাঠানোয় মোট করভার দাঁড়াল ৩৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। ইন্টারেনেটে দাঁড়াল ২১ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
মোবাইল অপারেটর রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, নতুন করে কর বাড়ানোর ফলে সরকার হয়তো ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব পেতে পারত। কিন্তু এখন মানুষের আয়ের যে পরিস্থিতি, তাতে তারা ব্যয় কমিয়ে দেবে। এতে সরকার বাড়তি ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব পাবে না।
সাহেদ আলম আরও বলেন, ‘মোবাইল সেবায় এখন গ্রাহকের ওপর কর আফগানিস্তানে ১২ শতাংশ, ভারতে ১৫, পাকিস্তানে ১৭, শ্রীলঙ্কায় ২৩ ও বাংলাদেশে ৩৩ শতাংশ। করোনা মহামারিকালে কেন মোবাইল সেবায় কর আরও বাড়ানো হলো, তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না।’