ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়াই অনলাইনে বেচাকেনা
একজন গ্রাহকের ফেসবুকে অভিযোগের ভিত্তিতে মিরপুরের শার্টোলজি নামের অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্মের কার্যালয়ে অভিযান চালান ভ্যাট গোয়েন্দারা। অভিযানকালে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির কোনো ভ্যাট নিবন্ধন নেই। অথচ ২০১৯ সালের জুন মাস থেকে এই পর্যন্ত ৬০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ ৪ লাখ ১৬ হাজার টাকা। আজ মামলা হয়েছে।
ফেসবুকে একজন গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১৯ নভেম্বর একটি অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্মের মিরপুরের কার্যালয়ে অভিযান চালান ভ্যাট গোয়েন্দারা। মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির নাম শার্টোলজি।
অভিযানকালে ভ্যাট গোয়েন্দারা দেখতে পান, ওই প্রতিষ্ঠানের কোনো ভ্যাট নিবন্ধন নেই। অথচ ২০১৯ সালের জুন মাস থেকে এই পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ৬০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট হিসেবে ৪ লাখ ১৬ হাজার টাকা পরিশোধ করার কথা তাদের। এসব অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আজ ঢাকা পশ্চিম ভ্যাট কমিশনারেটে মামলা হয়েছে।
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়। বর্তমান ভ্যাট আইন অনুযায়ী, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্য বেচাকেনা করলেও ভ্যাট নিবন্ধন নিতে হয়।
অনলাইনে পণ্য বিক্রির ওপর সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়। এই কার্যক্রমের সেবা কোড-এস ০৯৯.৬০। অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠানটি প্রতি মাসে ভ্যাট রিটার্ন দিয়ে ক্রেতার দেওয়া সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাটের টাকা পরিশোধ করবে।
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযানের এক সপ্তাহে আগে একজন গ্রাহক ওই প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে অভিযোগ করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা ওই অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্মের ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেছি। পরে অভিযান চালানো হয়।’ তিনি জানান, এমন আরও কিছু প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
ভ্যাট অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মিরপুরের শার্টোলজি নামের বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানটি কোনো ভ্যাট নিবন্ধন না নিয়েই অনলাইনে পণ্য বিক্রি করে আসছে। শার্টোলজি অনলাইনে পুরুষদের কাপড়চোপড় বিক্রি করে থাকে। মূলত পুরুষদের শার্ট বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে তা বাহক মারফত গ্রাহকের কাছে সরবরাহ করে থাকে। বিক্রির বিপরীতে কোনো ভ্যাট রসিদ দেওয়া হয় না। এসব বিষয়ে গত মাসে একজন গ্রাহক ফেসবুকে ভ্যাট গোয়েন্দাদের কাছে অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালান গোয়েন্দারা।
অভিযানকালে শার্টোলজির কার্যালয় থেকে অনলাইন কার্যক্রমসংক্রান্ত কিছু কাগজপত্র জব্দ করা হয়। এতে দেখা যায়, ২০১৯ সালের জুন মাস থেকে প্রতিষ্ঠানটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ৬০ লাখ টাকা পণ্য বিক্রি করেছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি পণ্য বিক্রয় ও সরবরাহ করে ৪ লাখ ১৬ হাজার টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ প্রমাণিত হলে ভ্যাট পরিশোধসহ দ্বিগুণ জরিমানা দণ্ড হতে পারে।