দেশের মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে। একান্নবর্তী পরিবারব্যবস্থা ক্রমেই বিলুপ্তির পথে। এমন বাস্তবতায় বার্ধক্যের দুর্দশা এড়াতে শক্তিশালী পেনশন–ব্যবস্থা জরুরি হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার ইনস্টিটিউট আব চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) আয়োজিত ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘বাংলাদেশে ইউনিভার্সাল পেনশন সিস্টেম’ শীর্ষক সভায় বক্তারা স্টক বা বন্ডে বিনিয়োগের বিকল্পসহ সম্পূর্ণ অর্থায়নে পেনশন–ব্যবস্থা চালু করা দরকার বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সত্যজিৎ কর্মকার ও অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফা। আইসিএবি সভাপতি মাহমুদউল হাসান খসরু স্বাগত বক্তব্য দেন এবং বিশ্বব্যাংকের লিড গভর্ন্যান্স স্পেশালিস্ট, ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সুরাইয়া জান্নাথ খান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। আইসিএবি কাউন্সিলের সদস্য ও সাবেক সভাপতি দেওয়ান নুরুল ইসলাম অধিবেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন। আইসিএবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ বসু সূচনা এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট মারিয়া হাওলাদার সমাপনী বক্তব্য দেন।
অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, আধুনিক ও দক্ষ পেনশন প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা সরকারি কর্মচারীদের উন্নত সেবায় সরাসরি ভূমিকা রাখে। পেনশন যেহেতু সরকারি ব্যয়ের উল্লেখযোগ্য অংশ, সেহেতু একটি সুশাসিত পেনশন–ব্যবস্থা দক্ষ আর্থিক ব্যবস্থাপনায়ও অবদান রাখে এবং সিস্টেমের ক্ষতির ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
সিনিয়র সচিব আরও বলেন, সুশাসন ও সব ক্ষেত্রে দক্ষ সেবা প্রদানের অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার পেনশন, বেতন ও প্রশাসনকে আধুনিকীকরণ করতে চায়।
আইসিএবি সভাপতি মাহমুদুল হাসান খসরু বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে এবং নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে দ্বৈত উত্তরণের সময়ে আছে। এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করার প্রয়োজন আছে। উন্নত সামাজিক কল্যাণ ও অর্থনৈতিকভাবে নিরাপদ জীবনের জন্য নাগরিকদের প্রত্যাশা বাড়ছে।
এই মহামারি চলাকালীন ধনী ও দরিদ্রের বৈষম্য বেড়েছে এবং মধ্যম আয়ের জনগোষ্ঠী চাকরি হারানোর কারণে দরিদ্র হয়ে গেছে। মাহমুদুল হাসান খসরু আরও বলেন, বৈষম্য গুরুতর উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। সর্বজনীন পেনশন–ব্যবস্থা আয়বৈষম্য কমাতে হাতিয়ার হিসেবে কাজ করতে পারে।