প্রবাসী আয়ে বিস্ময় চলছেই
সেপ্টেম্বরে ২১৫ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা
আয়ে প্রবৃদ্ধি ৪৬ শতাংশ
গত বছরের একই মাসে এসেছিল ১৪৭ কোটি ডলার
নোয়াখালী অঞ্চলের মানুষ আগে অর্থ পাঠাতেন বেশি, এখন সিলেট অঞ্চলে আয় আসা বেড়েছে
করোনাভাইরাসের মধ্যে প্রবাসীরা যেন অর্থ পাঠানো বাড়িয়ে দিয়েছেন। আগের যেকোনো সেপ্টেম্বরের তুলনায় গত মাসে প্রবাসীরা বেশি অর্থ পাঠিয়েছেন। ফলে বাড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। মহামারির প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই গেল সেপ্টেম্বরে ২১৫ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় পাঠিয়েছেন। গত বছরের একই মাসে এসেছিল ১৪৭ কোটি ডলার। ফলে গত মাসে প্রবাসী আয়ে ৪৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
প্রবাসী আয়ের মাধ্যমে পাচার করা টাকা ফেরত আসছে বলে অনেকের ধারণা। যদিও ব্যাংকাররা প্রবাসী আয় বাড়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ তুলে ধরছেন।
রাষ্ট্রমালিকানাধীন রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ প্রথম আলোকে বলেন, উন্নত দেশে যাওয়া অনেক বাংলাদেশির মোহভঙ্গ হয়েছে। তাঁদের অনেকের আয় কমে গেছে, আবার অনেকে স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে হতাশ হয়েছেন। ফলে অনেকেই দেশে ফেরার প্রস্তুতি শুরু করেছেন। এ জন্য তাঁরা সব জমানো টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছেন। আবার করোনার মধ্যে অনেকে নিকট আত্মীয়দের দানও করছেন। এসব কারণে আয় বেড়েছে।
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, আগে নোয়াখালী অঞ্চলের মানুষ বেশি টাকা পাঠাতেন। এখন সিলেট অঞ্চলে টাকা আসা বেড়েছে।
আগে নোয়াখালী অঞ্চলের মানুষ বেশি টাকা পাঠাতেন। এখন সিলেট অঞ্চলে টাকা আসা বেড়েছে।
জানা যায়, করোনার মধ্যে গত জুলাই মাসে ২৫৯ কোটি ডলারের আয় এসেছিল। আর আগস্টে এসেছিল ১৯৬ কোটি ডলার। এত প্রবাসী আয় আসায় ব্যাংকগুলোতে ডলারের উদ্বৃত্ত দেখা দিয়েছে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার কিনে দাম স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের বেশি হয়েছে। আর ডলার কিনে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা দেওয়ায় অনেক ব্যাংকের হাতে অতিরিক্ত টাকা জমে গেছে। ঝুঁকি বিবেচনায় ব্যাংকগুলো বিনিয়োগও করছে না। সরকার ও অন্য ব্যাংকের কাছে টাকা রেখে আয়ের চিন্তা করছে।
জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে প্রবাসী আয় এসেছে ৬৭১ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪৯ শতাংশ বেশি। বৈধ পথে প্রবাসী আয় বাড়াতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা ঘোষণা করে সরকার। সে অনুযায়ী, ১ জুলাই থেকে প্রবাসীরা প্রতি ১০০ টাকার বিপরীতে ২ টাকা প্রণোদনা পাচ্ছেন। এ কারণেও আয় বাড়তে শুরু করেছিল।
গত আগস্টে প্রবাসী আয়ে ৩৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। ২০১৯ সালের আগস্টে এসেছিল ১৪৪ কোটি ডলার, গত আগস্টে যা বেড়ে হয় ১৯৬ কোটি ডলার।
আর গত জুলাইয়ে প্রবাসী আয়ে ৬২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে আসে ১৫৯ কোটি ডলার,গত জুলাইয়ে যা বেড়ে হয় ২৫৯ কোটি ডলার।