প্রণোদনার টাকা পায়নি ৫৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান
দুই-তৃতীয়াংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরকার ঘোষিত প্রণোদনার টাকা পায়নি। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) গবেষণায় এই চিত্র ওঠে এসেছে।
সানেম ৩০৩টি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মতামতের ভিত্তিতে এই গবেষণাটি করেছে। গত জুলাই মাসে টেলিফোনের এই মতামত নেওয়া হয়।
গবেষণায় বলা হয়েছে, ১০২ টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তাদের প্রতিষ্ঠান সরকার ঘোষিত প্রণোদনার টাকা পেয়েছেন। উত্তরদাতাদের ৩৪ শতাংশ প্রণোদনার অর্থ পেয়েছেন। আর ৫৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান কোনো টাকা পাননি। ১১ শতাংশ প্রণোদনা সুবিধার কথা জানে না। তবে যারা প্রণোদনার টাকা পেয়েছে, তাদের ৮৭ শতাংশের উপকার হয়েছে।
আজ শনিবার এই গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ জন্য ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। সেখানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমানসহ দেশের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সানেম নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ৮৮ভাগ উত্তরদাতা মনে করেন, করোনাকালে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে দুর্নীতিই প্রধান চ্যালেঞ্জ। বন্দর ও শুল্ক সংক্রান্ত অসুবিধার কথা জানিয়েছেন ৭১ শতাংশ উত্তরদাতা। করোনা ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতার কথা বলেছেন ৭০ শতাংশ উত্তরদাতা।
গবেষণার ফল অনুযায়ী, গত এপ্রিল-জুন মাসে ব্যবসায়ীদের মধ্যে যে ধরনের আস্থাহীনতা ছিল, এখন জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এসে তাদের সেই আস্থা কিছুটা বেড়েছে।
চীনা বিনিয়োগ কেন ভারত, ইন্দোনেশিয়ায় বেশি যাচ্ছে, ওই সব দেশে কি ধরনের সুবিধা দেয়-এসব নিয়ে গবেষণার তাগিদ দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি আরও বলেন, ‘দুর্নীতি থেকে কবে মুক্তি পাব, জানি না। এটি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান বলেন, ব্যবসায়ীদের কর ও নগদ সহায়তা সুবিধা দেওয়ার কারণে সরকার কত টাকা হারাচ্ছে; এত সুবিধা দেওয়ার পর ওই সব ব্যবসা খাত কি মূল্য সংযোজন করছে-তা নিয়ে পর্যালোচনা হওয়া উচিত।
অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, সরকার ঘোষিত প্রণোদনার অর্থ পেতে একেক সময় একেক ফরম পূরণ করতে হয়েছে। নানা কাগজ দিতে হয়েছে। এতে দীর্ঘসূত্রতা বেড়ে গেছে।
সরকার ঘোষিত প্রণোদনার সমালোচনা করেন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (এমসিসিআই) সভাপতি নিহাদ কবির। তিনি বলেন, ‘প্রণোদনার ঘোষণা ব্যবসায়ীদের স্বস্তি দিয়েছিল। কিন্তু এর বাস্তবায়ন স্বস্তি দিতে পারেনি।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম খান বলেন, সানেমের প্রতিবেদনটির সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো দুর্নীতি। করোনাকালে এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।