কর্মসংস্থান
দেশে ২৭ লাখ বেকারের তথ্য কতটা বিশ্বাসযোগ্য
কর্মসংস্থান পরিস্থিতি
২০১৬-১৭ সালের জরিপ অনুযায়ী দেশে শ্রমশক্তির আকার ৬ কোটি ৩৫ লাখ মানুষ
কাজের মধ্যে ছিলেন ৬ কোটি ৮ লাখ
করোনার আগে বেকারের সংখ্যা ২৭ লাখ
এপ্রিল-জুলাই সময়ে বেকারত্ব ১০ গুণ বেড়েছে: বিবিএস
তরুণদের মধ্যে ২৫% বেকার: আইএলও
বাংলাদেশে সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ হয়েছে ২০১৭ সালে। সেই জরিপ অনুযায়ী, দেশে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী ৬ কোটি ৩৫ লাখ। আর তাঁদের মধ্যে কাজ করেন ৬ কোটি ৮ লাখ নারী-পুরুষ। দুই সংখ্যার মধ্যে বিয়োগ দিলেই পাওয়া যায় বেকারের সংখ্যা। আর সেটি হলো ২৭ লাখ। আর শতাংশ হিসাবে বাংলাদেশে বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ২ শতাংশ।
যতই অবিশ্বাস্য লাগুক, বেকারত্বের হারের এই পরিসংখ্যানই ব্যবহার করে যেতে হবে। অথচ কোভিড-১৯–এর কারণে অর্থনীতি বিপর্যস্ত। গত মার্চের শেষ দিক থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর অর্থনীতি কার্যত অচল হয়ে গেলে বহু মানুষ কাজ হারান। অর্থনীতি আবার সচল হলেও অনেকেই কাজ ফিরে পাননি। তারপরেও সরকারি হিসাবে বেকারের সংখ্যা ২৭ লাখই থাকবে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) আবার যখন শ্রমশক্তি জরিপ করবে, তখনই জানা যাবে নতুন তথ্য।
বাংলাদেশ উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশ হলেও কর্মসংস্থান তেমন বাড়েনি। অর্থনীতি এখন পুনরুদ্ধারের পথে হলেও বড় চ্যালেঞ্জ কর্মসংস্থান বাড়ানো।
জরিপ হয়নি তিন বছরে
গত তিন বছরে দেশে শ্রমশক্তি নিয়ে নতুন জরিপ করা হয়নি। এর আগে ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পরপর দুই বছর ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ করা হয়েছিল। তারপরেই এটি বন্ধ হয়ে যায়। মূলত বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় একটি প্রকল্পের আওতায় পরপর দুই অর্থবছর জরিপটি করা হয়। প্রকল্পে বিদেশি সাহায্য আসা শেষ, প্রকল্পও বন্ধ। তা ছাড়া আরেকটি মুশকিলও হয়েছিল। ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে কর্মে নিয়োজিতদের সংখ্যা জানা যেত বলে একবার দেখা গেল, হঠাৎ বেকারের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। একবার মৌসুমি বেকারত্বের সেই তথ্য জানার পরপরই বন্ধ হয়ে যায় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে শ্রমশক্তি জরিপের কাজ। কর্মসংস্থান কমে গেছে, তার চেয়ে তথ্য না জানাটাকেই হয়তো শ্রেয় মনে করছে বিবিএস।
সমস্যা আসলে সংজ্ঞায়
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সংজ্ঞা অনুযায়ী, কাজপ্রত্যাশী হওয়া সত্ত্বেও সপ্তাহে এক দিন এক ঘণ্টা মজুরির বিনিময়ে কাজের সুযোগ না পেলে ওই ব্যক্তিকে বেকার হিসাবে ধরা হবে। সাধারণত জরিপ করার সময়ের আগের সপ্তাহের যেকোনো সময়ে এক ঘণ্টা কাজ করলেই তাকে বেকার বলা যাবে না।
অর্থনীতিবিদ রিজওয়ানুল ইসলাম উন্নয়ন ভাবনায় কর্মসংস্থান ও শ্রমবাজার গ্রন্থে বেকারত্বের সংজ্ঞা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। যেমন যে ব্যক্তি কোনো কর্মসংস্থানে নিয়োজিত নন এবং কাজের খোঁজও করছেন না, তিনি সংজ্ঞা অনুযায়ী বেকার নন। এ ধরনের বেকারত্বকে বলা হয় স্বেচ্ছাবেকারত্ব। আর যিনি কাজ খুঁজেও পাচ্ছেন না, তাঁকে বলা হয় বাধ্যতামূলক বেকারত্ব। বাধ্যতামূলক বেকারত্ব আবার তিন প্রকারের। যেমন সামঞ্জস্যহীনতাজনিত বেকারত্ব, বাণিজ্য চক্রজনিত ও কাঠামোগত বেকারত্ব।
কখনো অর্থনীতির ওঠানামার কারণে বেকারত্ব সৃষ্টি হতে পারে। যেমন মন্দার সময় বেকারত্ব বাড়ে, তেজিভাব ফিরে এলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। সমস্যা দেখা যায় মন্দা দীর্ঘস্থায়ী হলে। একে বলা হয় বাণিজ্য চক্রজনিত বেকারত্ব।
শ্রমবাজারে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে কিছু অসামঞ্জস্য থাকায় বেকারত্ব সৃষ্টি হয়। অনেকে পছন্দমতো কাজ খোঁজার জন্য কিছু সময়ের জন্য বেকার থাকতে প্রস্তুত থাকতে পারেন। অথবা কেউ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গিয়ে কাজ খুঁজতে পারেন। এ ধরনের বেকারত্ব হচ্ছে সামঞ্জস্যহীনতাজনিত বেকারত্ব।
কখনো অর্থনীতির ওঠানামার কারণে বেকারত্ব সৃষ্টি হতে পারে। যেমন মন্দার সময় বেকারত্ব বাড়ে, তেজিভাব ফিরে এলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। সমস্যা দেখা যায় মন্দা দীর্ঘস্থায়ী হলে। একে বলা হয় বাণিজ্য চক্রজনিত বেকারত্ব। আবার চাহিদা ও সরবরাহের পরিবর্তনের ফলে শ্রমশক্তির চাহিদায়ও পরিবর্তন ঘটে। এর ফলে কিছু শ্রমিক বেকার হয়ে যেতে পারে। প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের ফলেও বেকারত্বের সৃষ্টি হতে পারে। এ ধরনের বেকারত্বকে কাঠামোগত বেকারত্ব বলা হয়।
সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ করলে বেকার না বলার সংজ্ঞাটা উন্নত দেশের জন্য যতটা প্রযোজ্য, অন্যদের ক্ষেত্রে তা নয়। কারণ, উন্নত দেশে বেকার ভাতা পাওয়া যায়। বাংলাদেশের মতো দেশে জীবনধারণের জন্য কোনো না কোনো কাজে নিয়োজিত থাকতে হয়। যদিও সেসব শোভন কাজ নয়, মজুরিও কম।
বাংলাদেশে কারা বেকার
কত দিন বেকার থাকলে একজনকে দীর্ঘমেয়াদি বেকার বলা যাবে, এর কোনো সংজ্ঞা বাংলাদেশে নেই। যুক্তরাষ্ট্রে ২৭ সপ্তাহ বা তার বেশি সময় বেকারদের দীর্ঘমেয়াদি বেকার বলা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নে এক বছরের বেশি সময়কে দীর্ঘমেয়াদি বেকার ধরা হয়।
সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ করলে বেকার না বলার সংজ্ঞাটা উন্নত দেশের জন্য যতটা প্রযোজ্য, অন্যদের ক্ষেত্রে তা নয়। কারণ, উন্নত দেশে বেকার ভাতা পাওয়া যায়। বাংলাদেশের মতো দেশে জীবনধারণের জন্য কোনো না কোনো কাজে নিয়োজিত থাকতে হয়। যদিও সেসব শোভন কাজ নয়, মজুরিও কম। ফলে জীবনধারণের ন্যূনতম আয় না করেও কর্মে নিয়োজিত বলে ধরে নেওয়া হয়। আবার বাংলাদেশে প্রায় ৮৫ শতাংশই অনানুষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত। এখানে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বেতন–ভাতা নির্ধারণের কোনো নিয়ম নেই।
তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) বাংলাদেশের জন্য একটি মানদণ্ড মাঝেমধ্যে অনুসরণ করে। সেটি হচ্ছে, যাঁরা সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজের সুযোগ পান না, তাঁদের ছদ্ম বেকার বলা হয়। দেশে এমন মানুষ প্রায় ৬৬ লাখ, যাঁরা পছন্দমতো কাজ পান না। ফলে এঁদের বড় অংশই টিউশনি, রাইড শেয়ারিং বা বিক্রয়কর্মীসহ নানা ধরনের খণ্ডকালীন কাজ করতে বাধ্য হন।
কাজ পান কত মানুষ
সর্বশেষ ২০১৭ সালে প্রকাশিত শ্রমশক্তি জরিপ বলছে, ২০১৭ সালের হিসাবে তখন দেশে ৬ কোটি ৮ লাখ লোক কাজের মধ্যে ছিলেন। ২০১৩ সালে যা ছিল ৫ কোটি ৮১ লাখ। এর মানে, ওই চার বছরে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে ২৭ লাখ। অর্থাৎ বছরে গড়ে পৌনে সাত লাখ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে।
জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে যত লোক চাকরি বা কাজ করেন, তাঁদের মধ্যে ৬০ দশমিক ৯ শতাংশ আত্মনিয়োজিত বা ব্যক্তিগত অংশীদারত্ব অথবা ব্যবসা-বাণিজ্য উদ্যোগের ভিত্তিতে কর্মসংস্থান হয়েছে। গৃহস্থালি পর্যায়ে কাজ করেন ২০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ। সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত কিংবা স্থানীয় সরকার পর্যায়ে কাজ করেন মাত্র ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। আর এনজিওতে আছেন দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
আইএলও বলছে, করোনা মহামারির কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে তরুণ প্রজন্ম। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ২৪ দশমিক ৮ শতাংশই বেকার হয়েছেন। করোনার কারণে তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার দ্বিগুণ হয়েছে।
করোনায় কাজ হারালেন কতজন
বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠীভুক্ত প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) এক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, কোভিড-১৯–এর কারণে দেশের অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে (এমএসএমই) কর্মরত ৩৭ শতাংশ মানুষ বেকার হয়েছেন। বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ২০ শতাংশ আসে এই অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান থেকে। প্রায় দুই কোটি নারী-পুরুষ এই খাতে কাজ করেন। তবে শ্রমিক সংগঠনগুলোর মতে, করোনার কারণে পোশাক খাতের এক লাখের বেশি কর্মী কাজ হারিয়েছেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) বলছে, এই সংখ্যা আরও বেশি, তিন লাখের মতো।
আইএলও বলছে, করোনা মহামারির কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে তরুণ প্রজন্ম। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ২৪ দশমিক ৮ শতাংশই বেকার হয়েছেন। করোনার কারণে তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার দ্বিগুণ হয়েছে। আইএলওর হিসাবে, সবাই যদি পূর্ণকালীন কাজ করতেন (সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টা), তাহলে বাংলাদেশে করোনায় ১৬ লাখ ৭৫ হাজার তরুণ-তরুণী কাজ হারিয়েছেন।
গত সেপ্টেম্বরে বিবিএস এক টেলিফোন জরিপ করে দেখেছে, করোনা শুরুর তিন-চার মাসে ব্যাপকভাবে বেকারত্ব বেড়েছিল। যেমন মার্চ মাসের তুলনায় জুলাই মাসে বেকারত্ব ১০ গুণ বেড়েছিল। গত মার্চ মাসে বেকারত্বের হার ছিল ২ দশমিক ৩ শতাংশ, জুলাইয়ে তা বেড়ে হয় ২২ দশমিক ৩৯ শতাংশ। তবে বিবিএসের মতে, সেপ্টেম্বরে এসে বেকারত্বের হার নেমে এসেছে সেই ৪ শতাংশে, অর্থাৎ ২৭ লাখ। বিবিএস এ ক্ষেত্রে আইএলওর বেকারত্বের সংজ্ঞা অনুযায়ী হিসাব করেছে।
আবার সরকারি হিসাবে করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকে ছুটিতে দেশে এসেছিলেন প্রায় দুই লাখ প্রবাসী। তাঁরা ফিরতে পারছেন না। সব প্রস্তুতি শেষ করেও যেতে পারেননি এক লাখ নতুন কর্মী। এ ছাড়া এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ফিরে এসেছেন আরও এক লাখ কর্মী। সব মিলিয়ে কাজ নেই চার লাখ প্রবাসী কর্মীর।
পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার কী হবে
২০২১ সাল অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার প্রথম বছর। তাতে বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ১ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা বলা আছে। সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে, ২০২৫ সাল নাগাদ দেশে শ্রমশক্তি বাড়বে ২ দশমিক ৩ শতাংশ হারে, আর কর্মসংস্থানও বাড়বে একই হারে। অর্থাৎ
শ্রমশক্তির যত প্রবৃদ্ধি, ততই কর্মসংস্থান। আর এই সময়ে বিদেশে চাকরির সুযোগ হবে দশমিক ৫ শতাংশ হারে, আর অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে ১ দশমিক ৫ শতাংশ।
ধরে নেওয়া হয়, দেশে প্রতিবছর ২১ লাখ মানুষ নতুন করে কর্মসংস্থানের বাজারে প্রবেশ করেন। নতুন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী সবাই কাজ পাবেন। তাঁদের মধ্যে একটি অংশ দেশের ভেতরে চাকরি করবেন, আরেকটি অংশ জনশক্তি হিসেবে অন্য দেশে রপ্তানি হবেন, আর বাকিরা নিজেরাই আত্মকর্মসংস্থান খুঁজে নেবেন। সুতরাং এখন যে ২৭ লাখ বেকার, তা আরও কমে আসবে। যদিও প্রবৃদ্ধি বাড়লেই কর্মসংস্থান বাড়বে—এমনটি দেখা যাচ্ছে না বাংলাদেশে।
কর্মসংস্থানহীন প্রবৃদ্ধি
গত দেড় দশকে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের ঘর থেকে ৮ শতাংশের ঘরে উন্নীত হয়েছে। প্রবৃদ্ধি বাড়লেও কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধি দিন দিনই কমেছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জাতীয় কর্মসংস্থান কৌশলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিগত
২০০২-০৩ থেকে ২০০৫-০৬ অর্থবছরের মধ্যে প্রতিবছর ২ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে কর্মসংস্থান বেড়েছে।
পরের পাঁচ বছরে তা বেড়েছে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ হারে।
২০১০ সালের পরের তিন বছর ২ দশমিক ৩ শতাংশ হারে
এবং পরের চার বছর অর্থাৎ ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তা কমে হয় ১ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে।
সব মিলিয়ে ২০০২ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে দেশে গড়ে প্রতিবছর ১৪ লাখ আর ২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বছরে গড়ে সাড়ে ৯ লাখ নতুন চাকরি হয়েছে।
ওপরের পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, বাংলাদেশ উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশ হলেও এই প্রবৃদ্ধি কর্মসংস্থানহীন। এখন দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে। এর মধ্যেই নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে বড় একটি জনগোষ্ঠী। সরকারি হিসাবই বলছে, এ সময় দারিদ্র্য হার ৯ শতাংশীয় পয়েন্টে বেড়েছে। তাই এখন দেশে গরিব মানুষের সংখ্যা পাঁচ কোটির বেশি। এই মানুষগুলোকে টেনে তুলতে হলে কাজে ফেরাতে হবে। সুতরাং পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনাকে অবশ্যই কর্মসংস্থানের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। আর এ জন্য প্রয়োজন উৎপাদনশীল খাতে বেসরকারি বিনিয়োগ। এটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
চাকরি খোঁজার বৃহত্তম অনলাইন পোর্টাল বিডিজবসডটকম-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম ফাহিম মাশরুর এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, করোনার আগে থেকেই চাকরির বাজার খারাপ ছিল। বিশেষ করে শিক্ষিত যুবকদের জন্য পছন্দমতো কাজের খবর কম ছিল। আর করোনার কারণে গত এপ্রিল ও মে মাসে চাকরির বিজ্ঞাপন বেশ কমেছিল। এখন করোনার আগের পর্যায়ের ৮০-৯০ শতাংশ চাকরির বিজ্ঞাপন আসছে। কর্মসংস্থান একটি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে সমন্বিত পরিকল্পনা লাগবে।