২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

তাঁর শিশুসুলভ হাসি ভুলতে পারি না

আবুল মাল আবদুল মুহিত
ফাইল ছবি

সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের মৃত্যুতে নিজের একজন অভিভাবককে হারালাম। আমার অতি প্রিয় একজন মানুষ ছিলেন তিনি। তিনি আমার প্রিয় মুহিত ভাই। তাঁর রেখে যাওয়া কাজই আমি করে যাচ্ছি এখন।

বাংলাদেশ আজ উন্নতির একটি ধাপে উঠেছে। আরও সামনে এগোচ্ছি আমরা। এ অবস্থা তো আর এমনিতে হয়নি। স্বীকার করতে হবে, এর পেছনে মুহিত ভাইয়ের অবদান অনেক। ১০ বছর ধরে তিনি নিজের প্রজ্ঞা ও মনন দিয়ে এদেশের অর্থনীতিরই সেবা করে গেছেন।

বাংলাদেশের অর্থনীতিকে তিনি যে জায়গায় রেখে গেছেন, সেখান থেকেই শুরু করেছি আমি। তাঁর আচার-আচরণ ছিল অমায়িক। তাঁর সবচেয়ে বড় বিষয় যেটা ছিল সেটা হচ্ছে, সরাসরি (স্ট্রেট কাট) কথা বলা। এটা আমার খুব ভালো লাগত।

অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের আগে থেকেই মুহিত ভাই দেশের অর্থনীতির জন্য কাজ করেছেন। কাজ করতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে অনেক রাগারাগিও হয়েছে। আমি যখন অর্থ মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলাম, তখন তিনি ওই কমিটির বৈঠকে আসতেন। কিন্তু কখনোই কোনো সমস্যা হতো না। তিনি দরদ দিয়ে সবার সব কথা শুনতেন এবং নমনীয় থাকতেন। তিনি ভালো ভালো পরামর্শ দিতেন।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল
ছবি: সংগৃহীত

কখনো কোনো বিষয়ে দ্বিমত করলে তিনি হাসতেন। তাঁর শিশুসুলভ হাসিটা ভুলতে পারি না। রাগারাগি হলেও পরে আর তিনি কিছু মনে রাখতেন না। এটা তাঁর চরিত্রের আরেকটি ভালো দিক। শুধু অর্থনীতি নয়, সংস্কৃতি ও ক্রীড়াঙ্গন নিয়েও তাঁর অনেক আগ্রহ ছিল। একসঙ্গে ক্রিকেট মাঠে কত যে খেলা উপভোগ করেছি!

দেশের পুরো অর্থনীতিকে আবুল মাল আবদুল মুহিত একটি উন্নততর ও সম্ভাবনাময় জায়গায় দাঁড় করিয়ে গেছেন। পুরো বাংলাদেশের জন্য এটি বড় গৌরবের বিষয়। এ জন্য তাঁর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। তাঁর দেখানো পথ বা তাঁর তৈরি কোনো অর্থনৈতিক বা সামাজিক কাঠামো কোনোভাবেই বদলানো হয়নি। বছর ঘুরলে কিছু বিষয় সমন্বয় করতে হয়। সামর্থ্য ও চাহিদার সমন্বয় ঘটিয়ে সেগুলো নিয়েই এখন কাজ করে যাচ্ছি।

আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে আমার অনেক সুখকর স্মৃতি আছে। কোনটা ছেড়ে কোনটা বলব। শুধু এটুকু বলব যে তিনি আপাদমস্তক একজন ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি সামনে থাকলে আমরা সবাই আস্থাশীল থাকতাম। আমাদের ভরসার অপর নাম ছিলেন তিনি।

আজ মুহিত ভাইকে আমরা হারিয়েছি। মনটা খুব খারাপ। তাঁর মতো জ্ঞানী-গুণী মানুষ সমাজে খুব বেশি জন্মায় না। সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকলে বাংলাদেশকে আরও বেশি কিছু দিতে পারতেন। আমাদের দুর্ভাগ্য যে তিনি দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন। তাঁর জন্য আমরা দোয়া করব। আল্লাহ যেন তাঁকে বেহেশত নসিব করেন।

অর্থমন্ত্রী