এবার আইএমএফের কাছে বেল আউট সুবিধা চাইল শ্রীলঙ্কা
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে বেল আউট চেয়েছে শ্রীলঙ্কা। গতকাল সোমবার এ আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপ দেশ। তবে আলোচনায় ভারত যুক্ত হলেই শুধু আইএমএফ সহায়তার বিষয়টি বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে।
আর্থিক সংকটের মুখে বিপর্যস্ত হয়ে পড়া শ্রীলঙ্কা বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে পারবে না বলে জানিয়েছে দেশটি। এ পরিস্থিতিতে চলতি বছর একাধিক ঋণের সুদ পরিশোধ করতে পারবে না তারা, এ কারণে দেশটি একাধিক ঋণদাতার কাছে খেলাপি হয়ে পড়বে।
গতকাল শ্রীলঙ্কা প্রায় আট কোটি ডলারের বৈদেশিক ঋণ শোধ করতে পারবে না বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়।
এদিকে ওয়াশিংটনে আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা ইতিবাচকভাবে শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী আলি সাব্রির সহযোগী শামির জাভাহির এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক আলোচনায় আইএমএফকে দ্রুত অর্থায়ন বা জরুরি তহবিলের অনুরোধ করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে শ্রীলঙ্কার পক্ষ থেকে আলোচনায় ভারতও প্রতিনিধিত্ব করবে বলে জানান তিনি।
বর্ধিত এই তহবিল সুবিধা মঞ্জুরের বিষয়ে আইএমএফ বেশ ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেন জাভাহির। এ তহবিল পাওয়া গেলে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান না আসা পর্যন্ত সাময়িকভাবে আর্থিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে।
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে এত বড় সংকটের মুখে পড়েনি।
ঋণখেলাপি শ্রীলঙ্কার সর্বনাশের মূল কারণ, রাষ্ট্রীয় বন্ড বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে বাছ বিচারহীনভাবে বিক্রি করা। বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্পে অর্থায়ন করতে দেদার ডলারে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করেছে তারা।
এ ডলারভিত্তিক সঞ্চয়পত্র দেশটির সর্বমোট বৈদেশিক ঋণের প্রায় অর্ধেক। রাষ্ট্রীয় রিজার্ভে ডলারের পরিমাণ তলানিতে ঠেকার কারণে এ সঞ্চয়পত্রের কিস্তিভিত্তিক লাভের অর্থ ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়েছে শ্রীলঙ্কার সরকার। মূল কথা হলো, যেসব প্রকল্প তারা করেছে, তার কোনোটি কাজে আসেনি।
জরুরি আমদানি ব্যয় মেটাতে ডলারের জন্য এখন শ্রীলঙ্কার সরকার তাই আইএমএফের দ্বারস্থ হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে সঞ্চয়পত্রের সুদের অর্থ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শোধ করবে তারা।
অর্থাৎ শ্রীলঙ্কা প্রাথমিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রায় বিক্রি করা এবং সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে নেওয়া ঋণের পুনঃতফশিলীকরণ করছে।
আর চীনের কাছ থেকে নেওয়া শ্রীলঙ্কার ঋণের পরিমাণ তার সর্বমোট বৈদেশিক ঋণের মাত্র ১০ শতাংশ। এটা জাপান, এডিবি ও বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে আলাদা করে নেওয়া ঋণের সমপরিমাণ।