রাশিয়া–ইউক্রেন উত্তেজনায় যুক্তরাজ্যে পেট্রল-ডিজেলের দাম রেকর্ড উচ্চতায়
যুক্তরাজ্যের পেট্রলস্টেশনগুলোতে চলতি সপ্তাহে পেট্রল ও ডিজেলের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের মধ্যে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়ায় যুক্তরাজ্যেও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
তবে পেট্রল আর ডিজেলের মধ্যেই মূল্যবৃদ্ধি থেমে থাকেনি। যুক্তরাজ্যের বড় বড় খুচরা বিক্রেতাও এ সুযোগে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে দেশটিতে চলমান মূল্যস্ফীতির মধ্যে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে সেখানকার মোটরচালক ও অন্যান্য ব্যবসার ওপর আরও চাপ তৈরি হয়েছে।
গতকাল সোমবার যুক্তরাজ্যের পেট্রলস্টেশনগুলোতে প্রতি লিটার পেট্রল দেড় পাউন্ড এবং প্রতি লিটার ডিজেলের মূল্য ১ দশমিক ৫২ পাউন্ডে বিক্রি করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ জানিয়েছে, গতকাল সোমবার যুক্তরাজ্যের পেট্রলস্টেশনগুলোতে প্রতি লিটার পেট্রল দেড় পাউন্ড এবং প্রতি লিটার ডিজেলের মূল্য ১ দশমিক ৫২ পাউন্ডে বিক্রি করা হচ্ছে। এর মানে হচ্ছে, একটি ৫৫ লিটারের পারিবারিক ব্যবহারের গাড়ির জ্বালানি ট্যাংকে পেট্রলের জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় ৮২ পাউন্ড। আর একই পরিমাণের ট্যাংকে ডিজেল ভর্তি করতে লাগবে প্রায় ৮৪ পাউন্ড। অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় যুক্তরাজ্যে প্রতি লিটার পেট্রলের দাম রাখা হচ্ছে প্রায় ১৭৪ টাকা (প্রতি পাউন্ডের বিনিময়মূল্য ১১৭ টাকা ধরে)। আর প্রতি লিটার ডিজেলের দাম রাখা হচ্ছে ১৭৮ টাকা।
জ্বালানির এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য দেশটির খুচরা বিক্রেতাদের দায়ী করেছেন যুক্তরাজ্যের গাড়িচালকদের সংগঠন রয়্যাল অটোমোবাইল ক্লাব (র্যাক)। সংগঠনটির মুখপাত্র সাইমন উইলিয়ামস বলেন, ‘জ্বালানির লাগামহীন ক্রমবর্ধমান দামের জন্য আমাদের বড় পেট্রলস্টেশনগুলোর বিক্রেতারা দায়ী। তাঁরা বাড়তি মুনাফার আশায় দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের পাইকারি দামের তুলনায় অনেক বেশি দাম রাখা হচ্ছে যুক্তরাজ্যের খুচরা বাজারে। এত বেশি দাম বাড়ানোর অধিকার রাখেন না খুচরা বিক্রেতারা।’
সাইমন উইলিয়ামস আরও বলেন, ‘ছোট খুচরা বিক্রেতারা ঘন ঘন জ্বালানি কেনেন না। ফলে দাম বাড়ায় তাঁদেরও বিক্রির জন্য উচ্চ পাইকারি দামে জ্বালানি কিনতে হচ্ছে। কিন্তু বড় বড় খুচরা বিক্রেতা যাঁরা সব সময় জ্বালানি কিনে মজুত রাখেন, তাঁদের এখন দাম বাড়ানো উচিত নয়। আমরা তাঁদের কাছে এই কঠিন সময়ে গাড়িচালকদের সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করার আহ্বান জানাই।’
যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি এখন গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌঁছেছে। বর্তমানে দেশটির মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
র্যাক জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি এখন গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌঁছেছে। বর্তমানে দেশটির মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। আগামী এপ্রিলে এটি বেড়ে ৮ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। এর মধ্যে জ্বালানি তেলের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি দেশটিতে জীবনযাত্রার সংকটকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।