এক সপ্তাহের বিরতির পর আবার বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম

জ্বালানি তেল

বিশ্ববাজারে তেলের দাম আজ সোমবার আবারও বেড়েছে। বিশ্ববাজারে তেলের চাহিদা কমে যাবে—এমন একটি শঙ্কা থাকলেও সৌদি আরব ও রাশিয়া রপ্তানি কমানোর কারণে তেলের দাম বেড়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, আজ সকালে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৭৫ সেন্ট বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৮৫ দশমিক ৫৫ ডলারে ওঠে; অন্যদিকে, ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ৮০ সেন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৮২ দশমিক শূন্য ৫ ডলার।

এদিকে আগামী সেপ্টেম্বর মাসের জন্য ডব্লিউটিআইয়ের চুক্তির মেয়াদ কাল মঙ্গলবার শেষ হবে। আগামী অক্টোবর মাসের জন্য ওই তেলের দাম ৭৩ সেন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ব্যারেলপ্রতি ৮১ দশমিক ৩৯ ডলার।

প্রায় দুই মাস ধরে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়ছে। গত সপ্তাহের আগপর্যন্ত ব্রেন্ট ক্রুড ও ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম টানা সাত সপ্তাহ বেড়েছে, এরপর গত সপ্তাহে দাম ২ শতাংশ কমে। যুক্তরাষ্ট্রে নীতি সুদহার আরও কিছুদিন বাড়তি থাকবে—এ ধারণার ভিত্তিতে ডলারের দর বৃদ্ধি এবং চীনের আবাসন খাতের দুরবস্থার কারণে প্রবৃদ্ধির ধীরগতির আশঙ্কায় গত সপ্তাহে তেলের দাম কমে। তারপর আজ আবার তা বাড়ল।

তেলের বাজারে সরবরাহও কমছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, আগস্ট মাসে ওপেক ও সহযোগী দেশগুলোর অপরিশোধিত তেল রপ্তানি টানা দ্বিতীয় মাসের মতো কমতে পারে।

সিঙ্গাপুরভিত্তিক একটি কোম্পানির পোর্টফোলিও ব্যবস্থাপক স্টেফানো গ্রাসো রয়টার্সকে বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে সরবরাহ কমে গেলেও তেলের চাহিদা বাড়ছে। মন্দা হয়ে চাহিদা কমে না গেলে বলতে হবে, ওপেক ও সহযোগী দেশগুলোর হাতে এখন তেলের বাজারের নিয়ন্ত্রণ।’

সম্প্রতি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল আমদানিকারী দেশ চীন তেল কেনা কমিয়ে দিয়েছে। তবে বছরের শুরুতে তারা বিপুল পরিমাণ তেল আমদানি করে পরিশোধনাগারগুলো ভরিয়ে রেখেছে, সে কারণে তারা এটা পারছে।

জুলাই মাসে সৌদি আরব থেকে চীনের তেলা কেনা কমেছে ৩১ শতাংশ। তবে রাশিয়ার কাছ থেকে তারা এখনো ভর্তুকি মূল্যে তেল আমদানি করছে। বস্তুত, রাশিয়াই এখন চীনের তেলের প্রধান উৎস।

তবে চীনের পরিশোধনাগারগুলো পরিশোধিত তেলজাত পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধি করেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সচল তেলখনির সংখ্যা গত সপ্তাহে আরও পাঁচটি কমেছে, ২০২২ সালের মার্চ মাসের পর যা সর্বনিম্ন। মোট ৫২০টি খনি থেকে তারা এখন তেল উত্তোলন করছে।

সৌদি আরবের নেতৃত্বে ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো চলতি বছর থেকেই মরিয়া হয়ে তেলের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছে। সে লক্ষ্যে তারা দফায় দফায় তেল উৎপাদন কমিয়েছে। তাতে বিশ্ববাজারে তেলের দাম আবারও ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলারের ওপরে উঠে গেছে।

সৌদি আরবও চায় তেলের দাম ৮০ ডলারের ওপরে থাক; তাহলে দেশটির পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রম চালানো সুবিধাজনক হয় বলে নিউইয়র্ক টাইমসের এক সংবাদে বলা হয়েছে। সে লক্ষ্যে তারা সফল।