যুক্তরাষ্ট্রে তেলের মজুত ৪০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন
যুক্তরাষ্ট্রের জরুরি প্রয়োজনের জন্য মজুত তেলের (এসপিআর) পরিমাণ ৪০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। অন্যদিকে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব দিন দিন তেলের সরবরাহ কমাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস জানিয়েছে, জ্বালানি তেলের গ্রাহকদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সক্ষমতা কমে আসছে। বৈশ্বিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রেও। দেশটিতে জ্বালানি তেলের দাম অনেক বেড়েছে। মূল্যস্ফীতির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে জো বাইডেন প্রশাসন জরুরি রিজার্ভ থেকে প্রচুর পরিমাণে তেল বাজারে ছাড়ে। এতে ভোক্তারা কিছুটা অবকাশ পেলেও জরুরি মজুত থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে তেল কমে গেছে। সেটা আবার ভবিষ্যতের জন্য নতুন চিন্তা তৈরি করেছে। কারণ, বাইরে থেকে তেলের সরবরাহ না বাড়লে আবার বাড়তে পারে তেলের দাম। অন্যদিকে মজুত থাকা তেলও বেশি খরচ করার সুযোগ দেশটির সামনে নেই।
এদিকে সৌদি আরব ও রাশিয়া তাদের দেশ থেকে তেল সরবরাহ আরও কমিয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে তেলের দাম দিন দিন বাড়ছে। চলতি মাসে তেলের দাম বেড়ে গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে। ফলে বাড়তি দাম দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশের পক্ষেই তেল কেনা সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে গোল্ডম্যান স্যাকসের তেল গবেষণা বিভাগের প্রধান ড্যান স্ট্রুয়েভেন বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় মার্কিন নীতিনির্ধারকদের কাছে এই মুহূর্তে কম উপকরণই অবশিষ্ট আছে। গোল্ডম্যান স্যাকসের অনুমান, জরুরি রিজার্ভ কমে যাওয়ায় চলতি বছর তেলের দাম বাড়তি থাকবে। এমনকি আগামী বছর এই সময়ে প্রতি ব্যারেল তেলের গড় দাম হতে পারে ১০০ ডলার।
সাধারণত যুদ্ধ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো পরিস্থিতিতে তেলের জরুরি মজুত বা এসপিআরকে কাজে লাগান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টরা। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে মজুত থেকে গত দুই বছরে প্রায় ২৭ কোটি ব্যারেল তেল উত্তোলন করেছে দেশটি। এতে ১৯৮৩ সালের আগস্ট মাসের পর সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে জরুরি তেলের মজুত।
ধারাবাহিকভাবে মজুত কমতে থাকায় যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য এসপিআর বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু উচ্চ মূল্যের কারণে নতুন করে তেল কেনার পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে দেশটির জ্বালানি বিভাগ।