রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ার পর কমেছে বিটকয়েনের দাম
অবশেষে বিটকয়েনের দাম কমতে শুরু করেছে। মূলত ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সুদহারসংক্রান্ত ঘোষণার পর বিটকয়েনের দাম ১৫ শতাংশ কমেছিল, যদিও এরপর দাম কিছুটা বেড়েছে। শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৯২ হাজার ৬০০ ডলারে নেমে আসে। এরপর আজ শনিবার তা ৯৭ হাজার ডলারে ওঠে।
গত সপ্তাহে বিটকয়েনের দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চ ১ লাখ ৮ হাজার ডলারে উঠে যায়। এরপর ফেডারেল রিজার্ভ যখন বলে, আগামী বছর নীতি সুদহার দুবার পর্যন্ত কমানো হতে পারে, তখন শুরু হয় উল্টো গতি। শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে ৯২ হাজার ৬০০ ডলারে নেমে আসে। শুধু বিটকয়েন নয়, ইথার ও ডজিকয়েনের মতো ক্রিপ্টোমুদ্রার দামও কমেছে। এসব মুদ্রার দরপতন হয়েছে বিটকয়েনের চেয়েও বেশি। খবর ইকোনমিক টাইমস।
যুক্তরাষ্ট্রের এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড বা ইটিএফ, যার মাধ্যমে সরাসরি বিটকয়েনে বিনিয়োগ করা যায়, সেই তহবিলে বৃহস্পতিবার বিনিয়োগ অনেকাংশে যায়। সেই সঙ্গে অনেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেন; এক দিনে ৬৮ কোটি ডলার বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেন তাঁরা। ফলে টানা ১৫ দিন বিটকয়েনের যে মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছিল, সেই ধারায় ছেদ পড়ে। অর্থাৎ বোঝা যাচ্ছে, বিটকয়েনের বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহে ভাটা পড়েছে।
সামনে বড়দিন, দীর্ঘ ছুটিতে যাবে পশ্চিমা বিশ্ব। এ সময়ও বিটকয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার স্তিমিত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে আগামী ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণ করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি তো বলেই রেখেছেন, ক্ষমতায় বসার পরই যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি করা পণ্যে শুল্ক আরোপ করা হবে। এতে যেমন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুস্থানীয় দেশগুলো আক্রান্ত হবে, তেমনি বন্ধু নয়, এমন দেশগুলোও আক্রান্ত হবে। এ ছাড়া ফেডারেল রিজার্ভ নীতি সুদ হ্রাসের গতি কমিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
তবে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে ক্রিপ্টোমুদ্রার রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন; এ পরিস্থিতিতে মূলধারার আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কত দ্রুত ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করতে শুরু করবে, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করবে।
বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, বৃহত্তর অর্থনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত ও সুনির্দিষ্ট ঘটনা, উভয়ের ওপরই বিটকয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্য নির্ভর করবে।
ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর বিটকয়েনের এই মূল্যবৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে সবাই এখন কমবেশি অবগত। সেটা হলো, বাইডেন প্রশাসনের তুলনায় ট্রাম্প অনেক বিটকয়েনবান্ধব। এমনকি তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র হবে বিটকয়েনের রাজধানী; সেই সঙ্গে তাঁর প্রশাসনে আছেন বিটকয়েনপ্রেমী ও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক।
এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন এক ঘোষণা দিয়েছেন। সেটা হলো, যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত তেল রিজার্ভের মতো ডিজিটাল মুদ্রার রিজার্ভ গড়ে তুলবেন তিনি।