২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

বাজার মাত করেছে টোকিও মেট্রোর শেয়ার, প্রথম দিনেই বেড়েছে ৫০ শতাংশ

টোকিও মেট্রোছবি: রয়টার্স

কেনাবেচার প্রথম দিনে টোকিও মেট্রোর শেয়ারের দাম হু হু করে বেড়েছে। বিশ্বের ব্যস্ততম এই মেট্রোরেলব্যবস্থার শেয়ার বাজারে ছাড়ার পর বুধবার প্রথম কেনাবেচার দিনে প্রতিটি শেয়ারের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়ে। সরকারি মালিকানাধীন টোকিও মেট্রো শেয়ার ছেড়ে বাজার থেকে ২৩০ কোটি ডলার তুলেছে, ফলে গত ছয় বছরে এটি ছিল সবচেয়ে বড় গণপ্রস্তাব।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, টোকিও মেট্রোর ৯টি লাইন প্রতিদিন কমবেশি ৬৫ লাখ যাত্রী ব্যবহার করে। বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মেট্রো ব্যবস্থা লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ড যত মানুষ ব্যবহার করে, এই সংখ্যা তার চেয়ে বেশি। জাপানের রাজধানী শহর এবং এর আশপাশের বিশাল শহরতলির মানুষ এই মেট্রো ব্যবহার করে।

শেয়ার বিক্রি করে যে অর্থ পাওয়া গেছে, তার মাধ্যমে পুনর্নির্মাণ বন্ডের অর্থ পরিশোধ করা হবে। ২০১১ সালের ভূমিকম্প, সুনামি ও পারমাণবিক দুর্ঘটনার পর এই বন্ড বাজারে ছাড়া হয়েছিল। এসব ঘটনায় জাপানে ১৮ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে। টোকিও মেট্রোর প্রতি শেয়ারের প্রাথমিক মূল্য ছিল ১ হাজার ২০০ ইয়েন, যা প্রথম দিনে ১ হাজার ৭৩৯ ইয়েনে বিক্রি হয়েছে।

টোকিও মেট্রোর মালিকানা দেশ হিসেবে জাপান ও টোকিও শহরের হাতে। তবে কোম্পানিটির শেয়ার বাজারে ছাড়ার কারণে সরকারের মালিকানা ৫০ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। জাপানের অনেক রেলব্যবস্থা এর আগেই বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে এই শেয়ার কেনার জন্য ১৫ গুণ বেশি আবেদন পড়েছিল।

এর আগে সবচেয়ে বড় প্রাথমিক গণপ্রস্তাব ছাড়া হয়েছিল ২০১৮ সালে। তখন সফটব্যাংক গ্রুপ তাদের মুঠোফোনের শেয়ার বাজারে ছেড়ে রেকর্ড ২ হাজার ৩৫০ কোটি ইয়েন তুলেছিল। সফটব্যাংক গ্রুপ জাপানি কোটিপতি মাসাইয়োশি সনের প্রযুক্তি ও টেলিকমবিষয়ক কোম্পানি।

লন্ডনে সবার আগে জনসাধারণের জন্য মাটির নিচে রেল পরিবহনব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল। আর টোকিওতে এই রেল নির্মাণ করা হয় ১৯২৭ সালে। জাপানের রাজধানী ছিল প্রথম এশীয় শহর, যেখানে এমন একটি নগর পরিবহন গড়ে তোলা হয়েছিল।

বর্তমানে টোকিওর নগর সরকার আলাদাভাবে আরও চারটি লাইনের মাধ্যমে সাবওয়ে সিস্টেম পরিচালনা করে। এর বাইরে ইস্ট জাপান রেলওয়ে ভূ–উপরিস্থ কিছু রেললাইন পরিচালনা করে, যার মধ্যে রয়েছে ইয়ামানোতি লাইন। এ ছাড়া বেশ কিছু বেসরকারি সেবাও রয়েছে।

জাপানে জনসংখ্যার সংকট রয়েছে। তবে টোকিও এর ফলে কমই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে শহরের মেট্রোব্যবস্থা ভালো মুনাফা করছে, তাদের ব্যবসাও স্থিতিশীল। এসব কারণে কোম্পানিটি ভালো লভ্যাংশ দেয়, যা এর শেয়ার কিনতে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করেছে। আগামী মার্চ মাসে শেষ হওয়া অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ৪০ ইয়েন লভ্যাংশ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

চলতি বছরের মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরে টোকিও মেট্রো ৪ হাজার ৬০০ কোটি ইয়েন নিট মুনাফা অর্জন করেছে। আগের বছরের চেয়ে এটি ৬৭ শতাংশ বেশি। বর্তমান অর্থবছরে কোম্পানিটি ৫ হাজার ২০০ কোটি ইয়েন মুনাফা করার লক্ষ্য ঠিক করেছে।