ভারতের কোটা চায় বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ও ভারতের পতাকা

নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য আমদানিতে ভারতের কাছে আবার বার্ষিক কোটা সুবিধা চেয়েছে বাংলাদেশ। যাতে বাংলাদেশের চাওয়া নিত্যপণ্যগুলো বছরে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যন্ত দেশটি রপ্তানি করতে পারে। আগে থেকেই বিষয়টি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে।

বাংলাদেশ মনে করছে, এ কোটা–সুবিধা চালু হলে তাতে হঠাৎ হঠাৎ পণ্য রপ্তানি বন্ধের কারণে সমস্যায় পড়তে হবে না বাংলাদেশকে। ভুটান ও মালদ্বীপের ক্ষেত্রে এ কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে ভারত।

গত সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারত শীর্ষ সম্মেলনেও বাংলাদেশ এ কোটা–সুবিধা চেয়েছিল। এ নিয়ে তখন আলোচনা হলেও ভারত সরকার এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এবার তাই নতুন করে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে।

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের দুই দিনব্যাপী বৈঠকের প্রথম দিনে এসব আলোচনা হয়। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির নেতৃত্বে একটি দল এতে অংশ নেয়।

দলের অন্যরা হলেন নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মো. মাহবুবুল হক ও মো. হাফিজুর রহমান এবং উপসচিব ফারহানা ইসলাম। অন্যদিকে ভারতের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী প্রিয়ুশ গয়ালের নেতৃত্বাধীন একটি দল অংশ নেয় বৈঠকে। উভয় দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের আগের বৈঠক ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৮ সালে।

ভারত থেকে সাধারণত চাল, ডাল, গম, পেঁয়াজ, আদা, রসুন ইত্যাদি পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ। এসব পণ্যের জন্যই মূলত বার্ষিক কোটা–সুবিধা চাওয়া হয়েছে। বৈঠকে অংশ নেওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো সারসংক্ষেপে বলা হয়, কোভিড-১৯ প্রেক্ষাপট এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে খাদ্যনিরাপত্তা–সংকটের আশঙ্কা আছে। এ সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের বৃহত্তম জোগানদাতা দেশ ভারত। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং কিছু দেশ নিত্যপণ্য রপ্তানি বন্ধ করে রাখায় ভারতের কাছ থেকে বার্ষিক কোটা নির্ধারণ জরুরি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভুটান ও মালদ্বীপকে বার্ষিক কোটার আওতায় পণ্য আমদানির সুবিধা দেয় ভারত। পাটজাত পণ্য আমদানিতে ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের ওপর অ্যান্টিডাম্পিং শুল্ক আরোপ করে রেখেছে ভারত।

প্রতি টন বাংলাদেশি পাটপণ্যের ওপর অ্যান্টিডাম্পিং শুল্ক ১৯ থেকে ৩৫২ ডলার পর্যন্ত। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছে, ‘এ শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য দ্বিপক্ষীয় ফোরামে দুই বছর ধরে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু ভারত সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি।’

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, গতকালের বৈঠকে এটি বহাল না রাখার অনুরোধ করা হয়েছে।