রাশিয়ার তেলের বেঁধে দেওয়া দাম বাস্তবায়নে আরও কঠোর হবে জি-৭
রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে আরও কঠোর হওয়ার অঙ্গীকার করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। জি–৭ ভুক্ত ধনী দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীরা বলেছেন, রাশিয়া যে বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে তেল বিক্রি করছে, তা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউক্রেনে হামলার চালানোর পর রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে পশ্চিমা দেশগুলো। বিশেষ করে রাশিয়ার তেলের দাম বেঁধে দিয়েছিল জি–৭ বা ধনী দেশগুলো। কিন্তু রাশিয়া তার চেয়ে বেশি দামে রপ্তানি করছে বলে অভিযোগ আছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে জি–৭ ভুক্ত দেশের অর্থমন্ত্রীরা আরও কঠোর হওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকের পথ তাঁরা এ কথা জানিয়েছেন। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে জি–৭ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, রাশিয়া যেন পশ্চিমাদের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে তেল বিক্রি করতে না পারে, সে জন্য তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হবে। পশ্চিমের লক্ষ্য ছিল, বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ ব্যাহত না করে তেল বিক্রি থেকে রাশিয়ার আয় হ্রাস করা। সে জন্য বেঁধে দেওয়া দাম কার্যকর করতে তাদের এত তোড়জোড়।
কিন্তু চীনসহ বেশ কিছু দেশ পশ্চিমাদের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে জি–৭ ভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের এই বৈঠক।
জি–৭ ভুক্ত দেশের অর্থমন্ত্রীরা আরও বলেছেন, রাশিয়া বেনামি জাহাজ ব্যবহার করে বেশি দামে তেল রপ্তানি করছে। এই কার্যক্রম বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা যায়, রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা এড়াতে বেনামি ও পুরোনো জাহাজ ব্যবহার করে তেল রপ্তানি করে। এসব জাহাজ যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণও করা হয় না। কোথা থেকে এসব জাহাজ আসছে আর কোথায় যাচ্ছে, তার ঘোষণা থাকে না। এমনকি পশ্চিমাদের নজর এড়াতে এসব জাহাজে মাঝসমুদ্রে তেল ভরা হয়। এসব জাহাজের বহরকে বলা হয় ডার্ক ফ্লিট। রাশিয়ার আগে ইরান একই কায়দায় যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে তেল বিক্রি করত।
বৈঠকে জি–৭ ভুক্ত দেশের অর্থমন্ত্রীরা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নজরদারি বৃদ্ধির কথা বলেছেন, যেন তাদের সহায়তায় রাশিয়া এভাবে তেল বিক্রি করতে না পারে।
বৈঠকে সাত দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংক ও ওইসিডির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া বৈঠকে ইউক্রেনকে আরও ৫০ বিলিয়ন বা ৫ হাজার কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। এই ঋণ অবশ্য ইউক্রেনকে শোধ করতে হবে না। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার যে অর্থ পশ্চিমারা বাজেয়াপ্ত করেছে, তার সুদ থেকে এই ঋণ পরিশোধ করা হবে।