ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা
বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) অধিগ্রহণ–সংক্রান্ত এক তদন্তে সাক্ষ্য দিতে ঠিক সময়ে উপস্থিত হননি। এ কারণে তাঁর কাছ থেকে জরিমানা আদায়ে নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)।
গত শুক্রবার দেশটির একটি ফেডারেল আদালতে এ বিষয়ে আবেদন (ফাইলিং) করে এসইসি। তবে মাস্কের আইনজীবীরা বলেছেন, সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নতুন একটি তারিখের বিষয়ে সব পক্ষ একমত হয়েছে। ফলে নিষেধাজ্ঞা বা আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হবে না। খবর সিএনএনের
নানা নাটকীয়তার পর ২০২২ সালের এপ্রিলে প্রায় ৪৪ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারে খুদে ব্লগ লেখার জনপ্রিয় ওয়েবসাইট টুইটার কেনেন মার্কিন ধনকুবের ও প্রযুক্তি খাতে শীর্ষস্থানীয় উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক।
টুইটার কেনার পর এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি তদন্ত শুরু করে। ইলন মাস্ক নিয়ম মেনে টুইটারের শেয়ার কেনাকাটার তথ্য প্রকাশ করেছিলেন কি না এবং ক্রয়চুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত তাঁর বিবৃতিগুলো বিভ্রান্তিকর ছিল কি না, এসব বিষয় তদন্ত করছে এসইসি। চলতি বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের একজন ফেডারেল বিচারক এসইসির তদন্তের অংশ হিসেবে ইলন মাস্ককে সাক্ষ্য দেওয়ার নির্দেশ দেন।
ইলন মাস্ক ঠিক কবে সাক্ষ্য দিতে পারবেন, এ নিয়ে কয়েকবার সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়। পরে ১০ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের বিষয়ে সব পক্ষ রাজি হয়। সে অনুসারে এসইসির আইনজীবীরা রাজধানী থেকে উড়োজাহাজে উড়ে লস অ্যাঞ্জেলেসে যান।
কিন্তু সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হওয়ার মাত্র তিন ঘণ্টা আগে মাস্কের আইনজীবী এসইসিকে জানান, তাঁর মক্কেল সাক্ষ্য দিতে পারবেন না। কারণ, স্পেসএক্সের পোলারিস ডন মিশনের জন্য মাস্ক জরুরি ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল (ইস্ট কোস্ট) ভ্রমণে গেছেন। সে জন্য আইনজীবী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব দেন।
তবে এই প্রস্তাব মানতে রাজি নয় এসইসি। সংস্থাটি অভিযোগ করে বলেছে, ইলন মাস্ক আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করেছেন। সাক্ষ্যের তারিখ পরিবর্তনের জন্য এসইসি বা আদালতের কাছে লিখিত সম্মতি চাইতে হয়, কিন্তু ১০ সেপ্টেম্বরের আগে এ ধরনের কোনো আবেদন করেননি মাস্ক।
এসইসি বলেছে, সাক্ষ্য গ্রহণের দুই দিন আগেই স্পেসএক্স পোলারিস ডন মিশনের ঘোষণা করে। ফলে বিষয়টি মাস্কের অজানা থাকার কথা নয়। এর মাধ্যমে ইলন মাস্ক নিজেই কথার বরখেলাপ করেছেন। সাক্ষ্য প্রদানে বিলম্বের একটি কৌশল নিয়েছেন মাস্ক।
যা-ই হোক, নতুন করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী অক্টোবরে একটি তারিখ নির্ধারণের চেষ্টা করছে এসইসি। ওই তারিখে সাক্ষ্যের জন্য মাস্ক হাজির না হলে আদালতকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে এসইসি। এ ছাড়া সেপ্টেম্বরে সাক্ষ্য গ্রহণ করতে এসে তাদের যে ভ্রমণ খরচ হয়েছে, সে জন্য ক্ষতিপূরণ আদায়ের অনুরোধ করা হয়েছে আদালতে। ক্ষতিপূরণ না দিলে মাস্কের বিরুদ্ধে একটি নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব দায়ের করতে পারে এসইসি।
তবে মাস্কের আইনজীবীরা জানান, এ বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হবে না। কারণ, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো ইতিমধ্যে একটি নতুন সাক্ষ্যের তারিখে সম্মত হয়েছে।