মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিমান বানিয়ে বিশাল ক্ষতির শিকার বোয়িং
বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান কোম্পানি বোয়িং। মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিমান এয়ারফোর্স ওয়ানের বহরে নতুন জেট সরবরাহ করতে গিয়ে সেই ক্ষতির বোঝা আরও বাড়ছে বলে জানিয়েছে সিএনএন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিমানবহরে ভবিষ্যতের জন্য দুটি ৭৪৭ জেট সজ্জিত করতে বোয়িং যে চুক্তি করেছে, তাতে কোম্পানির আরও ৪৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ক্ষতি হয়েছে। এখন সব মিলিয়ে প্রতিটি জেটে তাদের ১০০ কোটি ডলারের বেশি ক্ষতি হচ্ছে। কোম্পানির সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদনের সূত্রে এই তথ্য দিয়েছে সিএনএন।
অনেক দিন ধরেই ক্ষতির মুখে আছে বোয়িং। কোম্পানির প্রধান নির্বাহী ডেভ ক্যালহুন বলেছেন, ৩৯০ কোটি ডলারের বিনিময়ে জেট বিমান দুটি তৈরির চুক্তি করা তাদের কখনোই উচিত হয়নি। এরপর ব্যয় বেড়ে গেছে এবং বিমান সরবরাহের সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব বিমান তৈরিতে কোম্পানিটি ২০২২ সালে ক্ষতির শিকার হয়েছে ১৪৫ কোটি ডলার আর ২০২১ সালে ক্ষতির পরিমাণ ছিল ৩১ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
বোয়িংয়ের সিইও ডেভ ক্যালহুন বলেন, এই চুক্তি করে বোয়িং হয়তো ভুল করেছে। শেষ যে ক্ষতিটা হলো তার কারণ হলো প্রকৌশলগত পরিবর্তন, শ্রমিক অসন্তোষ ও সরবরাহজনিত সমস্যা।
সাধারণত প্রতিরক্ষা চুক্তিতে ব্যয় বাড়লে তার ভার করদাতাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপে পড়ে বোয়িং স্থির মূল্যে দুটি নতুন জেট তৈরিতে রাজি হয়। এ ধরনের চুক্তি ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ যেকোনো সময় অপ্রত্যাশিত কারণে উপকরণ ব্যয় বেড়ে যেতে পারে। এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বোয়িং প্রতিশ্রুত উড়োজাহাজ সরবরাহে অঙ্গীকারবদ্ধ।
এয়ারফোর্স ওয়ান বিমান তৈরি ছাড়াও অন্য কারণেও বোয়িং ক্ষতির মুখে পড়েছে। দুটি বড় দুর্ঘটনার পর বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স জেটের উড়ান বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ২০১৯ সালের পর প্রায় প্রতি প্রান্তিকেই বোয়িংয়ের ক্ষতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে তাদের ২৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৫৫০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে।
বুধবার প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে বোয়িং ১১০ কোটি ডলার পরিচালন ক্ষতির কথা উল্লেখ করেছে, যদিও বিশ্লেষকেরা এতটা ক্ষতির পূর্বাভাস দেননি। তবে কোম্পানির রাজস্বও বেড়েছে প্রত্যাশাতীত—রাজস্ব ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৮ দশমিক ১ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৮১০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। সেই সঙ্গে উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনাও সমন্বয় করেছে বোয়িং। বছরের শেষ নাগাদ তারা প্রতি মাসে পাঁচটি ৭৮৭ জেট ও ৩৮টি ৭৩৭ ম্যাক্স উৎপাদন করতে চায়।
বিপুল ক্ষতি সত্ত্বেও কোম্পানির নগদ অর্থপ্রবাহ ইতিবাচক থাকবে বলেই মনে করছে বোয়িং। এতে আজ প্রাক্–বাজার লেনদেনে বোয়িংয়ের শেয়ারের দাম ৩ শতাংশ বেড়েছে।