জরিমানা দিয়ে বিচার এড়াতে চাইছে বোয়িং

বোয়িংএএফপি ফাইল ছবি

দোষ স্বীকার করতে রাজি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান কোম্পানি বোয়িং। সেই সঙ্গে জরিমানা দিয়ে বিচার কার্যক্রম এড়াতে চায় তারা। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এ তথ্য দিয়েছে।

সিএনএনের সংবাদে বিচার বিভাগের সূত্রে বলা হয়েছে, বিচার এড়াতে বোয়িং ৪৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার জরিমানা দিতে রাজি হয়েছে। যদিও বোয়িংয়ের দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা মোট ২ হাজার ৪৮০ কোটি ডলার জরিমানা দাবি করেছিলেন। এ পরিস্থিতিতে বোয়িংয়ের এই সামান্য জরিমানা দেওয়ার বিষয়টির বিরোধিতা করছেন স্বজনেরা।

সরকারের সঙ্গে বোয়িংয়ের ঐকমত্যে বলা হয়েছে, বোয়িং এখন থেকে তিন বছর স্বাধীন পর্যবেক্ষকের অধীনে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। সেই পর্যবেক্ষক অবশ্য বোয়িং নয়, ঠিক করবে সরকার। কিন্তু নিহতদের স্বজনেরা এই বন্দোবস্তে খুশি নন।

দুর্ঘটনায় নিহত মানুষের স্বজনদের আইনজীবী বলেন, দুটি দুর্ঘটনায় ৩৪৬ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। তাঁদের স্বজনদের যে বেদনা, এই বন্দোবস্তে সে বিষয়টি প্রতিফলিত হয় না। আইনজীবীরা মনে করছেন, এই চুক্তি প্রতারণামূলক; জনস্বার্থের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই।

বিবৃতিতে বোয়িং বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এই ঐকমত্য হয়েছে। যদিও এই ঐকমত্যের চূড়ান্ত অনুমোদন এখনো হয়নি; এখন আরও সুনির্দিষ্ট ও বিস্তারিত তথ্য দরকার।

বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের বিমানের প্রত্যয়নের সময় বোয়িং কর্তৃপক্ষ ফেডারেল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে ভুল পথে পরিচালিত করেছিল। ২০১৭ সালে এই মডেলের বিমান আকাশে ওড়ে। এরপর ২০১৮ ও ২০১৯ সালে দুটি দুর্ঘটনা হয়। এখানে বিমানের নিরাপত্তাব্যবস্থায় বড় ধরনের ঘাটতি ছিল এবং বোয়িং ফেডারেল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জালিয়াতি করেছিল।

২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ও বোয়িং অপরাধের অভিযোগ ফয়সালা করার বিষয়ে একমত হয়। সেই সঙ্গে বিচারিক কার্যক্রম পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বোয়িংকে তিন বছর সময় দেওয়া হয়; এই সময়ের মধ্যে তারা বিমানের নিরাপত্তাব্যবস্থার উন্নতি ঘটাবে এবং সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখবে। কিন্তু সেই সময় শেষ হওয়ার আগেই চলতি বছরের শুরুতে আলাস্কা এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজের প্যানেল খুলে পড়ে। এরপর আবার বোয়িংয়ের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়।

সম্প্রতি বোয়িংয়ের ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের নিরাপত্তাজনিত চুক্তি লঙ্ঘনের দায়ে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ গঠনের সুপারিশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের কৌঁসুলিরা। দেশটির বিচার বিভাগের কাছে এই সুপারিশ করেছেন তাঁরা।

বোয়িংকে বিচারের আওতায় আনা হবে কি না, সে বিষয়ে ৭ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল। গতকাল বিচার বিভাগ জানাল, আপাতত জরিমানা দিয়ে বিচার এড়াতে চাইছে বোয়িং।