আরও বেশি কয়লা তুলবে ভারত, নতুন বরাদ্দ ২৯৮০ কোটি রুপি
দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির চাহিদা মেটাতে ভারত আরও কয়লা খনি খনন করবে। এ লক্ষ্যে দেশটির সরকার ২ হাজার ৯৮০ কোটি রুপি অনুমোদন করেছে। সেই সঙ্গে তারা ভবিষ্যতে খনি খননের জন্য নিলামও করবে।
ইকোনমিক টাইমসের সংবাদে বলা হয়েছে, পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি ভারত সরকার জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনও করবে।
ভারতের কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি বলেছেন, কয়লা খনি খননের কাজ বেসরকারি বিভিন্ন কোম্পানিকেও দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে তারা ১৪টি কোম্পানিকেও তালিকাভুক্ত করেছে। এত দিন এই কাজ করত ভারতের ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর।
যোশি ইকোনমিক টাইমসকে বলেছেন, যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা দিয়ে ২০২৫-২৬ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ৯৫০ বর্গকিলোমিটার খনি খনন করা যাবে বলে তিনি আশা করছেন। সে বছরই হবে ভারতের পঞ্চদশ ফাইন্যান্স কমিশনের শেষ বছর।
কয়লা উত্তোলনের দুটি পর্যায়ে আছে। প্রথমত, আঞ্চলিক বা অগভীর খনন; দ্বিতীয়ত, গভীর খনন। ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অগভীর খননের জন্য ১ হাজার ৬৫০ কোটি রুপি এবং গভীর খননের জন্য ১ হাজার ৩৩০ কোটি রুপি বরাদ্দ করেছে।
২০২৩ সালের জন্য ব্রিটিশ পেট্রোলিয়ামের হিসাবে বলা হয়েছে, ভারতের প্রাথমিক জ্বালানির ৪৫ শতাংশ আসে কয়লা থেকে, গত ৪০ বছরে যার হিস্যা একরকম স্থিতিশীল আছে। তবে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি ২০২১ সালে বলেছিল, ভারত যতই পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দিক না কেন, কয়লাই হবে তার মূল উৎস। দেশটির সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা ভাবছে।
তবে কত কয়লা মাটির নিচে আছে, তা জানার জন্য অনুসন্ধান জরুরি। অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে যে ভূতাত্ত্বিক প্রতিবেদন পাওয়া যায়, তা নতুন ব্লক ইজারা দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়; এরপর যারা কাজ পায়, তাদের কাছ থেকে সেই ব্যয় তোলা হয়।
এদিকে ইকোনমিক টাইমসের আরেক সংবাদে বলা হয়েছে, তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কয়লার আমদানি–নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে চায় ভারত। দেশটির কেন্দ্রীয় কয়লা ও খনিমন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি বারবারই বলেছেন, তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লার জন্য ভারত শিগগিরই আমদানি-নির্ভরতা কাটিয়ে উঠবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মধ্যে সরকার কয়লার অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ঘাটতি শূন্যে নামিয়ে আনতে চায়।
এদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১২০ কোটি টন কয়লা উত্তোলনের পরিকল্পনা করেছে ভারত। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে বর্তমানে ভারত যে পরিমাণ কয়লা উত্তোলন করে, তার চেয়ে ৭৫ শতাংশ বেশি উৎপাদন করতে হবে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এমনটা জানিয়েছে ভারতের কয়লাবিষয়ক মন্ত্রণালয়। সে জন্যই কয়লা উৎপাদন বাড়াতে নতুন করে এই তহবিল অনুমোদন করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।