জি–২০ সম্মেলনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত নয়াদিল্লির ব্যবসায়ীরা
জি–২০ শীর্ষ সম্মেলনের কারণে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি ও আশপাশের ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়েছে। সম্মেলন উপলক্ষে নয়াদিল্লির অনেক বাজার ও শপিং মল বন্ধ থাকায় প্রায় ৯ হাজার সরবরাহকর্মী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং ৪০০ কোটি রুপি লোকসান হয়েছে বলে দাবি করেছেন নয়াদিল্লিকেন্দ্রিক ব্যবসায়ীরা।
বিশ্বের ২০টি দেশের প্রধানদের অংশগ্রহণে এবারের জি–২০ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে ভারতের নয়াদিল্লিতে। এই শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন ভারতের জন্য সফলতা হিসেবে বিবেচিত হলেও তা ব্যবসায়ীদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়েছে।
এ সম্মেলনের জন্য ৮ থেকে ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নয়াদিল্লি জেলার সমস্ত বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর থেকে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কনট প্লেস, খান মার্কেট, গোল মার্কেট, বেঙ্গলি মার্কেটসহ দিল্লির সব বাণিজ্যিক এলাকা। সোমবার ভোরের আগে সব ধরনের দোকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান না খোলার নির্দেশ ছিল। বন্ধ ছিল সব সিনেমা-থিয়েটার হল। শনি ও রোববার বন্ধ ছিল দিল্লি শহরের অটোরিকশা ও ট্যাক্সি। বেসরকারি যান চলাচলও বন্ধ ছিল ওই নির্দিষ্ট এলাকাগুলোয়। নির্দিষ্ট এলাকার বাইরের অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও তেমন একটা বেচাকেনা হয়নি। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার কারণে অনেক মানুষ বাড়ির বাইরে বের হয়নি।
নিউ দিল্লি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এনডিটিএ) সভাপতি অতুল ভার্গব ইকোনমিক টাইমসকে বলেন, ‘তিন দিনের বন্ধে নয়াদিল্লির ব্যবসায়ীরা ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি রুপির ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। আমরা এই সম্মেলনের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। নিরাপত্তাই যেহেতু প্রধান উদ্বেগের বিষয়, সেহেতু আমরাও চেষ্টা করেছি, যেন বিদেশি অতিথিরা আমাদের দেশের বিষয়ে সঠিক ভাবমূর্তি নিয়ে দেশে ফিরতে পারেন।’
দিল্লিতে রেস্তোরাঁগুলোর ডাইন-ইন (বসে খাওয়া) ও ডেলিভারি উভয়ই কমপক্ষে ৫০ শতাংশ কমে গেছে এবং এনসিআর (দিল্লি ও আশপাশের অঞ্চল) এলাকায় বিক্রি ২০ শতাংশ কমেছে। স্পেশালিটি রেস্তোরাঁর চেয়ারম্যান অঞ্জন চ্যাটার্জি বলেন, এই সময়ে অনেক বিক্রেতা পণ্য সরবরাহ করতে পারেননি।
সম্মেলন হয়েছে এক দীর্ঘ সপ্তাহান্তে, সে কারণে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি বৃদ্ধি হয়েছে। লাইট বাইট ফুডসের পরিচালক রোহিত আগরওয়াল বলেন, ‘দিল্লিতে আমাদের বিক্রি কমেছে ৫০ শতাংশ, এমনকি গুরগাঁওতেও আমাদের বিক্রি প্রায় ২০ শতাংশ কমে গিয়েছিল।’
দেশটির রাজধানীর শীর্ষ বাজার যেমন খান মার্কেট, কনট প্লেস কেনাকাটা ও রেস্তোরাঁর জন্য প্রসিদ্ধ। এসব জায়গা বন্ধ থাকার কারণে অনেক বিদেশি পর্যটককে আকর্ষণ করার দারুণ সুযোগ হারিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের মতে, এই সম্মেলনের প্রভাব পুরো রাজধানীতে অনুভূত হয়েছে।