আবারও শাটডাউনের মুখে যুক্তরাষ্ট্র, ৪৬,৭৫০ কোটি ডলার অর্থায়নের বিল পাস হাউসে
আবারও শাটডাউনের মুখোমুখি যুক্তরাষ্ট্র। যথারীতি শাটডাউন এড়ানোর জন্য তারা নতুন ব্যয় পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে এবং ইতিমধ্যে হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ এই ৪৬৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ৪৬ হাজার ৭৫০ কোটি ডলারের ব্যয়ের পরিকল্পনা পাস হয়েছে।
বিবিসি সংবাদে বলা হয়েছে, এর মধ্য দিয়ে আংশিক শাটডাউন এড়ানোর লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের ৩০ শতাংশ ব্যয়ের জন্য বরাদ্দ তহবিলের মেয়াদ আজ শুক্রবার মধ্যরাতে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। ফলে অনতিবিলম্বে নতুন ব্যয় পরিকল্পনা পাস না হলে শাটডাউনের মুখে পড়তে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে।
হাউসে বিলটি পাস হওয়ার পর এখন তা যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে পেশ করা হবে, বিলটি সেখানে পাস হলে সরকার আংশিক শাটডাউন এড়াতে পারবে। সিনেটের নেতারা এই পদক্ষেপে সমর্থন জানাবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন। তবে শঙ্কার বিষয় হচ্ছে, মার্কিন সরকার এবার শাটডাউন এড়াতে পারলেও এ নিয়ে গত দুই সপ্তাহের মধ্যে কংগ্রেস দুবার শাটডাউনের মুখোমুখি হলো।
গত বুধবার হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভের সদস্যরা ৩৩৯-৮৫ ভোটে ছয়টি অর্থায়নের বিল পাস করেছেন। খুব অনায়াসে এই বিল পাস হয়নি, সে জন্য হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ ও সিনেটের নেতারা মাসের পর মাস আলোচনা করেছেন।
বিলটি সিনেটে পাস হয়ে যাওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাতে স্বাক্ষর করে দিলে ১ হাজার ৫০ পৃষ্ঠার এই আইনের বদৌলতে কয়েক ডজন কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অর্থায়নের মেয়াদ ৮ মার্চ থেকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।
তবে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এখনো সমঝোতা হয়নি, যেমন প্রতিরক্ষা ব্যয়, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ ২২ মার্চের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। ফলে এসব বিষয় হাউস ও সিনেটকে একমত হতে হবে। ফলে হাউসের স্পিকার মাইক জনসনকে বিশেষ দায়িত্ব নিয়ে এই বৈতরণি পার হতে হবে বলে বিবিসির সংবাদে বলা হয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ এই প্রথম ৩৪ ট্রিলিয়ন বা ৩৪ লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। চলতি বছরের একদম শুরুতেই এই মাইলফলক ছাড়িয়ে গেছে দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ ৩৩ ট্রিলিয়ন থেকে ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলারে উঠতে খুব একটা সময় নেয়নি। গত সেপ্টেম্বর মাসে দেশটির জাতীয় ঋণ ৩৩ ট্রিলিয়ন ডলার স্পর্শ করে; এর ৪ মাসের মধ্যে তা ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার স্পর্শ করে। একদিকে দেশটির ফেডারেল রাজস্ব কমছে, অন্যদিকে ব্যয় বাড়ছে—উভয় কারণে দেশটির জাতীয় ঋণ দ্রুত বাড়ছে।
এদিকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণের সীমা বাড়ানো নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে কংগ্রেসে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টির সদস্যদের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা হয়। শেষ সময় ছিল ৫ জুন, তার মধ্যে জাতীয় ঋণ নিয়ে ঐকমত্য না হলে খেলাপি হয়ে যেত যুক্তরাষ্ট্র। শেষ পর্যন্ত তার আগেই সাময়িকভাবে জাতীয় ঋণসীমা স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়।
কিন্তু তহবিল–সংকটে প্রায় প্রায়ই সরকারি ব৵য় বন্ধের উপক্রম হচ্ছে। রিপাবলিকান পার্টির সদস্যরা সরকারের ব্যয় কমানোর পক্ষপাতী। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়া নিয়েও দুই পার্টির মতভেদ আছে। সে জন্য গত এক বছরে একাধিকবার শাটডাউন বা সরকারি ব্যয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।