বেসরকারি ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে চীনের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা
চীনের বেসরকারি খাতির ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতি ঘটাতে এবার নির্দেশনা জারি করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিসিটিভি জানিয়েছে, চীনের নীতিনির্ধারকেরা বেসরকারি খাতের পুনরুজ্জীবন ঘটাতে নতুন করে চেষ্টা করছেন বলে এতে বোঝা যাচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ জনিত বিধিনিষেধ এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর নানা ধরনের বিধিনিষেধের কবলে পড়ে চীনের বেসরকারি খাতের পুনরুজ্জীবন ব্যাহত হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে দেশটির প্রবৃদ্ধিতে। প্রযুক্তি থেকে শুরু করে গৃহশিক্ষকতা—এমন আরও অনেক খাতই নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিধিনিষেধের মুখে পড়েছে।
এ আগে জুলাই মাসে চীন সরকার বেসরকারি খাতের পুনরুজ্জীবনের পরিকল্পনা ঘোষণা করে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের জন্য কর ও মাশুল ছাড়সহ বেশ কিছু সুবিধা দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরও দেশটির বেসরকারি খাতের আত্মবিশ্বাস তেমন একটা ফেরেনি।
সিসিটিভির সূত্রে রয়টার্স আরও জানিয়েছে, চীনের সুপ্রিম কোর্ট বেসরকারি ফার্মের আইনি সুরক্ষা ও উদ্যোক্তাদের ব্যক্তিগত অধিকার সুরক্ষার নির্দেশনা দিয়েছে।
চীনের সুপ্রিম কোর্ট দেশটির বেসরকারি খাত সম্পর্কে মানুষের ধারণার উন্নয়ন ঘটাতে চায়। সিসিটিভি জানিয়েছে, বেসরকারি কোম্পানি ও উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হলে বা তাদের বদনাম করে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করা হলে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।
এ ছাড়া বেসরকারি কোম্পানির আইনি অধিকার ক্ষুণ্ন করা হলে কর্তৃপক্ষ কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে সিসিটিভি।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনায় চীনের ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের অর্থায়নের সুযোগ বৃদ্ধিতে জোর দেওয়া হয়েছে এবং সেই সঙ্গে অবৈধ ঋণের রাশ টানারও অঙ্গীকার করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পূর্বাভাস, চলতি বছর চীনের প্রবৃদ্ধি হবে ৫ শতাংশ। ২০২২ সালে দেশটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৩ শতাংশ। এ কারণে এবার ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধিও যথেষ্ট নয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে আছে দেশটির আবাসন খাতের ঋণসংকট।
এই পরিস্থিতিতে চীনের ৪ হাজার ৮৯৪টি বড় প্রকল্পে ৭২ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ ৫ লাখ ২৭ হাজার কোটি ইউয়ান বিনিয়োগ প্রয়োজন, কিন্তু বছরের প্রথম আট মাসে দেশটির বেসরকারি বিনিয়োগ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে।
সম্প্রতি এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের নানা চেষ্টা সত্ত্বেও চীনের অনেক বেসরকারি উদ্যোগ স্থানীয় পর্যায়ে কঠোর পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। এসঅ্যান্ডপির ভাষ্য, চীনের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো বাজেট ঘাটতিতে পড়ে হিমশিম খাচ্ছে, আর এ কারণে বেসরকারি কোম্পানির চেয়ে তারা সরকারি কোম্পানির সঙ্গে কাজ করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।