আবারও নীতি সুদহার কমাল পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক
বড়দিনের আগে নীতি সুদহার কমাল পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ নিয়ে মুদ্রানীতি কমিটির টানা পাঁচটি বৈঠকে নীতি সুদহার কমানো হলো। এবার ২০০ ভিত্তি পয়েন্ট সুদহার কমিয়েছে দেশটির দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে সুদহার ১৫ থেকে ১৩ শতাংশে নেমে এসেছে।
১৭ ডিসেম্বর থেকেই নতুন নীতি কার্যকর করেছে শাহবাজ শরিফ প্রশাসন। তাদের আশা, মুদ্রানীতির রাশ আলগা করার মধ্য দিয়ে বড় অর্থনীতিতে প্রাণ আসবে। মূল্যস্ফীতির হার কমে আসায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের (এসবিপি) মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে সুদহার কমানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। এ নিয়ে চলতি বছরে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৯০০ ভিত্তি পয়েন্ট নীতি সুদ কমাল; এমনকি ২০২০ সালে মহামারির মধ্যেও তারা এতটা নীতি সুদহার কমায়নি, সেবার নীতি সুদ কমানো হয় ৬২৫ ভিত্তি পয়েন্ট।
সুদহার কমানো নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে এসবিপি। তারা বলেছে, এই সিদ্ধান্তের জেরে পাকিস্তানের খাদ্যের মূল্যস্ফীতি কমবে। এদিকে দেশটিতে ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে গ্যাসের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক নেওয়া হচ্ছে। ফলে গ্যাসের দাম অনেকটাই বেড়েছে। সুদহার কমলে সেদিক থেকেও কিছুটা স্বস্তি পাবে মানুষ—এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ে ১২ জন বিশ্লেষকের জরিপ করেছে রয়টার্স। সেখানে দেখা গেছে, নভেম্বর মাসে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতির হার ৪ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে আসার কারণে বিশ্লেষকদের আশা ছিল, ২০০ ভিত্তি পয়েন্ট নীতি সুদহার কমানো হবে। মূলত, গত বছর মূল্যস্ফীতির হার অনেকটা বেশি থাকায় চলতি বছর কিছুটা কমে এসেছে; অর্থাৎ গত বছরের ভিত অনেকটা উঁচু থাকায় এবার মূল্যস্ফীতি অনেকটাই কমেছে। ২০২৩ সালের মে মাসে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতির হার ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
পাকিস্তানের আরিফ হাবিব লিমিটেডের গবেষণা ও ইকুইটি বিভাগের প্রধান তাহির আব্বাস রয়টার্সকে বলেন, নীতি সুদহার কমানোর কারণে অর্থনীতিতে গতি এসেছে। দেখা যাচ্ছে, শিল্প খাতে গতি এসেছে, ঋণের প্রবাহ বেড়েছে। তবে খাদ্য ও জ্বালানিবহির্ভূত মূল্যস্ফীতির হার এখনো বেশি থাকায় এবং রাজস্বঘাটতি থাকায় এখনো ঝুঁকি আছে বলে তিনি মনে করেন।
এর আগে গত জুন মাসে ১৫০, জুলাই মাসে ১০০, সেপ্টেম্বর মাসে ২০০ ও নভেম্বর মাসে ২৫০ ভিত্তি পয়েন্ট নীতি সুদহার কমানো হয়েছে। ২০২৩ সালের জুন মাসে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতির হার সর্বকালীন রেকর্ড উচ্চতায় বা ২২ শতাংশে ওঠে; এক বছর এই হার অপরিবর্তিত ছিল।