জুলাই মাসের পর ভারতের রিজার্ভ সর্বনিম্ন
চলতি বছর বিশ্বের অন্যান্য মুদ্রার বিপরীতে ডলার শক্তিশালী হয়েছে। দ্য ইউএস ডলার ইনডেক্সের তথ্যানুসারে, এ বছর ডলারের দর বেড়েছে ২০ শতাংশ। তাতে অন্যান্য দেশের মুদ্রার দরপতন হচ্ছে। বাড়ছে তাদের আমদানি ব্যয়। কমছে রিজার্ভ।
বিষয়টি শুধু বাংলাদেশের বেলায় সত্য নয়, রিজার্ভ হ্রাস এখন অনেক দেশেরই বাস্তবতা। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে গত সপ্তাহে অর্থাৎ ২১ অক্টোবর শেষ হওয়া সপ্তাহে রিজার্ভ প্রায় ৩৮০ কোটি ডলার কমেছে। সেদিন রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫২ হাজার ৪০০ দশমিক ৫২ কোটি ডলার, যা ২০২০ সালের জুলাই মাসের পর সর্বনিম্ন। সম্প্রতি এই তথ্য প্রকাশ করেছে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, ডলারের নিরিখে রুপি যাতে শক্তি না হারায়, তা নিশ্চিত করতে মার্কিন মুদ্রা ডলার বিক্রি করে চলেছে শীর্ষ ব্যাংক, যা রিজার্ভ হ্রাসের অন্যতম কারণ। খবর ইকোনমিক টাইমসের
গত বছরের অক্টোবর মাসে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার ছিল প্রায় ৬৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। তার পর থেকে ক্রমেই কমছে। বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সুদহার বৃদ্ধি এবং ভারতে আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ডলার শক্তিশালী হচ্ছে। ফলে রুপিকে সহায়তা দিতে শীর্ষ ব্যাংককে বাজারে ডলারের সরবরাহ বাড়াতে হচ্ছে। বিদেশি মুদ্রাভান্ডারও কমছে।
এদিকে ভারতীয় মুদ্রা রুপির দর কমছে। ইতিমধ্যে ডলারপ্রতি রুপির দর ৮৩ ছুঁয়ে ফেলেছিল। এরপর রুপির দর কিছুটা বাড়লেও ডলারের দর এখনো ৮২ রুপির ওপরে।
আমদানি খরচ মেটানোর পাশাপাশি অর্থনীতির ঝড়ঝাপটা সামলাতে বিদেশি মুদ্রাভান্ডার কাজে লাগে। অর্থনৈতিক মহলের বক্তব্য, যথেষ্ট পরিমাণে ডলার না থাকলে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হবে অপরিশোধিত তেল, শিল্পের কাঁচামালসহ বিভিন্ন জরুরি পণ্য আমদানিতে, যা ১৯৯০ সালে দেখা গিয়েছিল। ডলার বেচে রুপির দাম ধরে রাখার চেষ্টা কতটা ফল দেবে, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। তাঁদের বক্তব্য, বিশ্বজুড়ে ডলারের চাহিদা বাড়লে দাম বাড়বেই। কোনো দেশের শীর্ষ ব্যাংকের পক্ষেই তা ঠেকানো সম্ভব নয়।
বিদেশি মুদ্রারভান্ডার কমে যাওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের কাছে এ নিয়ে জবাব চেয়েছেন নবনির্বাচিত কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।