কক্সবাজারের সাবরাং হবে পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু: থাই প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও বাণিজ্য প্রতিনিধি নালিনি তাভিসিন বলেছেন, বাংলাদেশের পর্যটন খাতকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে কক্সবাজারে অবস্থিত সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক। নিকট ভবিষ্যতে পার্কটি বিশ্বের পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে।

কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলায় সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক নির্মাণ করছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বেজা জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার নির্মাণাধীন এ পর্যটন পার্ক পরিদর্শনে যান থাইল্যান্ডের ২৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।

নালিনি তাভিসিনের নেতৃত্বে থাই প্রতিনিধিদলে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও থাই ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। পরিদর্শন শেষে সাবরাংয়ের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন নালিনি তাভিসিন।

থাই প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, সাবরাং ট্যুরিজম পার্কের অবস্থান খুবই চমৎকার জায়গায়। এর একদিকে বঙ্গোপসাগরের নীল জলরাশি, অন্যদিকে সবুজবেষ্টিত পাহাড়। ফলে ভবিষ্যতে বিশ্বের পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু স্থান হবে এই পর্যটন স্থান। পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে পর্যটন খাতও এর মাধ্যমে অনেক বিকশিত হবে।

সাবরাং ট্যুরিজম পার্ককে উপযোগী করে গড়ে তুলতে থাইল্যান্ডের পর্যটন অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন নালিনি তাভিসিন। এ ক্ষেত্রে থাই সরকার বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে বলে জানান তিনি।

থাই প্রতিনিধিদলে দেশটির খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিদ্যুৎ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিল্প পার্ক স্থাপনকারী প্রতিষ্ঠান, আবাসন এবং হোটেল-রিসোর্ট খাতের ব্যবসায়ীরা ছিলেন। সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে এসব ব্যবসায়ীকে বিনিয়োগের আহ্বান জানান থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা।

বাংলাদেশে নিযুক্ত থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে রাষ্ট্রীয় সফরকালে এ দেশে পর্যটন খাতে বিনিয়োগ সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। তাঁর ওই সফরের রেশ ধরেই ব্যবসায়ীদের এ সফরের আয়োজন করেছে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সারোয়ার বারী জানান, সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে ২৮টি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জমি ইজারা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৪৬ কোটি মার্কিন ডলার। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে ভূমি উন্নয়নকাজ শেষে করেছে বেজা। পাশাপাশি অন্যান্য পরিষেবা সুবিধা নিশ্চিত করতে একটি প্রকল্প পরিকল্পনা (ডিপিপি) প্রস্তুত করা হয়েছে।

সাবরাংয়ের পাশাপাশি নাফ ট্যুরিজম পার্ক ও সোনাদিয়া ইকোট্যুরিজম পার্কে বিনিয়োগ করতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান।

বেজা জানিয়েছে, ৯৫০ একরের বেশি আয়তনের সাবরাং ট্যুরিজম পার্কটি কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ৮২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভের মাধ্যমে ট্যুরিজম পার্কের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ রয়েছে। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা অনুসারে, পর্যটন পার্কটি চালু হলে সেখানে দৈনিক দেশি-বিদেশি ৩৯ হাজার পর্যটক পরিদর্শনে যাবেন। সেখানে কর্মসংস্থান হবে প্রায় ১০ হাজার মানুষের।

অন্যদিকে টেকনাফ উপজেলায় প্রায় ৩০০ একর জমিতে দেশের প্রথম দ্বীপভিত্তিক নাফ ট্যুরিজম পার্ক স্থাপনের কাজ করছে বেজা। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে (পিপিপি) পার্কটি নির্মাণ করা হবে। এ জন্য ইতিমধ্যে উন্নয়নকারী বা ডেভেলপার নিয়োগে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।