জুন মাসে চীনের বেসরকারি উৎপাদন সূচক বেড়েছে

চীনের পতাকাছবি: রয়টার্স

বাজারের চাহিদা বৃদ্ধির হার কমলেও জুন মাসে চীনের উৎপাদন কার্যক্রম গত তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হারে বেড়েছে। মূলত উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে বেসরকারি জরিপে বলা হয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, চীনের উৎপাদন খাত ভালো অবস্থায় আছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, কাইজিন/এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল ম্যানুফ্যাকচারিং পিএমআই জুন মাসে ৫১ দশমিক ৮ পয়েন্টে উঠেছে; আগের মাসে যা ছিল ৫১ দশমিক ৭ পয়েন্ট। ফলে ২০২১ সালের মে মাসের পর এই সূচকের সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস ছিল, জুন মাসে এই সূচকের মান হবে ৫১ দশমিক ২ পয়েন্ট।

এই সূচকে মূলত চীনের ক্ষুদ্র ও রপ্তানিমুখী কোম্পানিগুলোর অবস্থা খতিয়ে দেখা হয়। এই সূচক অনুসারে, আট মাস ধরে চীনের উৎপাদন খাত সম্প্রসারণমুখী। যদিও চীনের সরকারি পিএমআই সূচকের সঙ্গে এটি মেলে না। রোববার প্রকাশিত সরকারি পিএমআইয়ে দেখা গেছে, জুন মাসে চীনের উৎপাদন কার্যক্রম সংকুচিত হয়েছে।

সংবাদে বলা হয়েছে, উৎপাদন খাতের গতি গত জুন মাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ছিল। বিশেষ করে রপ্তানি আদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যদিও ওর গতি কিছুটা কম ছিল।

জরিপে বলা হয়েছে, জুন মাসে ভোগ্যপণ্য ও অন্তর্বর্তীকালীন পণ্যের চাহিদা বেশি ছিল; সে তুলনায় বিনিয়োগ পণ্যের (যেসব পণ্য অন্য পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়) চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম ছিল।

কিন্তু সামগ্রিকভাবে চীনের অর্থনীতির গতি বাড়ছে না। দেশটির জিডিপির প্রায় ৩০ শতাংশ আসে আবাসন খাত থেকে; সেই আবাসন খাত এখন নানামুখী সংকটে জর্জরিত। এমনকি গত মে মাসে দেশটির সরকার আবাসন খাত চাঙা করতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করলেও কাজ হয়নি। এতে চীনের অর্থনীতি নিম্নমুখী হচ্ছে।

জরিপে আরও দেখা গেছে, ইস্পাত, কপার ও অ্যালুমিনিয়ামের মতো কাঁচামালের দাম ও জাহাজ পরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীরা চাপের মুখে আছেন। কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির হার দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

কাইজিন ইনসাইট গ্রুপের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ওয়াং ঝে রয়টার্সকে বলেন, বাজারে আত্মবিশ্বাসের অভাব ও অপর্যাপ্ত চাহিদা এখন মূল চ্যালেঞ্জ।

আগামী বছরের বাজার নিয়ে উৎপাদন খাতের নির্বাহীদের আত্মবিশ্বাস কমেছে। এর মূল কারণ হলো অর্থনীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা ও বাজারের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি। জুন মাসে এই খাতে নিয়োগও কমেছে।

এই পরিস্থিতিতে চীনের বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, আবাসন খাতের সংস্কারে মনোযোগ দিতে হবে; প্রয়োজন হলে নতুন বিধি ও আইনকানুন প্রণয়ন করতে হবে। সেই সঙ্গে সরকারের তিনটি প্রকল্পে মনোযোগ দিতে হবে, যেমন সাধ্যের মধ্যে আবাসন, শহরাঞ্চলের আশপাশের গ্রাম উন্নয়ন এবং বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায় এমন সরকারি সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, অর্থাৎ যা একই সঙ্গে প্রাত্যহিক ও জরুরি কাজে ব্যবহার করা যায়।