টয়োটা চায় ভারতে হাইব্রিড গাড়ির শুল্ক ২১ শতাংশ কমানো হোক
হাইব্রিড গাড়ির ওপর থেকে এক-পঞ্চমাংশের মতো শুল্ক কমানোর জন্য ভারত সরকারের কাছে অনুরোধ করেছে জাপানি গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানি টয়োটা মোটর করপোরেশন। সম্প্রতি ভারত সরকারের সর্বোচ্চ জননীতি প্রতিষ্ঠান নীতি উদ্যোগের কাছে লেখা এক চিঠিতে এ অনুরোধ জানিয়েছে জাপানি কোম্পানিটি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চিঠিতে টয়োটা বলেছে যে পেট্রলচালিত গাড়ির তুলনায় হাইব্রিড গাড়ি অনেক কম পরিবেশদূষণকারী। কিন্তু এর বিনিময়ে ভারত সরকারের ভারসাম্যপূর্ণ নীতি সুবিধা পাচ্ছে না এ ধরনের যানবাহন।
বিশ্বের বৃহত্তম গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানি টয়োটা ভারতে হাইব্রিড গাড়ির চাহিদা মেটাতে উৎপাদনক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি) তৈরি ও বিক্রির ওপর জোর দিচ্ছেন। এ ধরনের গাড়ি তৈরি ও ব্যাটারির জন্য ইভি কোম্পানিগুলোকে সরকার লাখ লাখ ডলার প্রণোদনাও দিচ্ছে।
ভারতে বৈদ্যুতিক গাড়ির ওপর মাত্র ৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে হাইব্রিড গাড়ির জন্য ৪৩ শতাংশের বেশি পর্যন্ত শুল্ক দিতে হয়। আর পেট্রলচালিত গাড়ির জন্য দিতে হয় ৪৮ শতাংশের মতো শুল্ক।
নীতি উদ্যোগের কাছে লেখা চিঠিতে টয়োটা বলেছে, পেট্রলচালিত গাড়ির তুলনায় হাইব্রিড গাড়ি কম কার্বন নিঃসরণ করে এবং জ্বালানি সাশ্রয় করে। সেই হিসেবে পেট্রলচালিত গাড়ির তুলনায় হাইব্রিডে মাত্র ৫ শতাংশীয় পয়েন্ট কম শুল্ক আরোপ ‘অপ্রতুল’।
টয়োটার ভারতীয় প্রধান বিক্রম গুলাতি জানান, পেট্রল গাড়ির সঙ্গে সাধারণ হাইব্রিড গাড়ির করের পার্থক্য ১১ শতাংশীয় পয়েন্ট ও ফ্লেক্স-হাইব্রিড গাড়ির জন্য এ পার্থক্য ১৪ শতাংশীয় পয়েন্ট হওয়া উচিত। সে হিসেবে হাইব্রিড গাড়িতে ৩৭ শতাংশ ও ফ্লেক্স-হাইব্রিড গাড়িতে ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের অনুরোধ করেছে টয়োটা। চিঠিতে বিক্রম গুলাতি বলেন, ‘আমরা বিনীতভাবে (ভারত সরকারের কাছে) একটি আনুপাতিক নীতি সমর্থনের জন্য অনুরোধ জানাই।’
এ বিষয়ে জানতে রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি নীতি উদ্যোগ। আর নীতি উদ্যোগের কাছে লেখা চিঠির বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে টয়োটা। তবে কোম্পানিটি বলেছে, জলবায়ুর সংকট মোকাবিলা ও কার্বন নির্গমন কমানোর ‘সবচেয়ে ভালো উপায়’ হবে বৈদ্যুতিক, হাইব্রিডসহ সব ধরনের বিকল্পের মাধ্যমে বহুমুখী পথে আগানো।
বিশ্বে হাইব্রিড প্রযুক্তির গাড়ি জনপ্রিয়তা পেয়েছে টয়োটার মাধ্যমে। এখনো হাইব্রিড গাড়ি তৈরিকেই প্রধান লক্ষ্য হিসেবে রেখেছে কোম্পানিটি। কিন্তু বর্তমানে পরিবেশসম্মত বৈদ্যুতিক গাড়ির পরিবর্তে হাইব্রিডে বেশি জোর দেওয়ায় বিনিয়োগকারী ও পরিবেশবাদীদের কাছ থেকে সমালোচনার সম্মুখীন হচ্ছে টয়োটা। যদিও টয়োটা বলছে, বাজারে বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো এখনো তৈরি হয়নি।
ভারতীয় বৃহৎ গাড়ি কোম্পানি টাটা মোটরস ও মাহিন্দ্রা বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির ওপর জোর দিচ্ছে। অন্যদিকে, টয়োটা ও হোন্ডার মতো জাপানি কোম্পানি হাইব্রিড গাড়িতেই বেশি ভরসা রাখছে। যদিও টয়োটা বৈদ্যুতিক গাড়ির পাশাপাশি হাইড্রোজেনচালিত গাড়ি তৈরি শুরু করেছে।