শীতে ৩৮ লাখ বিয়ে হবে ভারতে, যেসব ব্যবসার প্রত্যাশা করা হচ্ছে
ভারতে এবার দিওয়ালি উৎসবে ব্যবসা-বাণিজ্য ভালোই হয়েছে। অনেক নতুন রেকর্ড হয়েছে এই মৌসুমে। এখন ব্যবসায়ীরা আসন্ন শীতকালে বিয়ের মৌসুম শুরুর অপেক্ষায় আছেন। তাঁদের ধারণা, এবার বিয়ের মৌসুমেই চাহিদা অনেক বাড়বে।
এনডিটিভির সংবাদে বলা হয়েছে, এবার শীতে ভারতে প্রায় ৩৮ লাখ বিয়ের অনুষ্ঠান হতে পারে। তাতে পণ্য, সেবাসহ মোট ৪ দশমিক ৭৪ লাখ কোটি রুপির ব্যবসা হবে বলে ধারণা। সেটা হলে গত বছরের তুলনায় বিয়ের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি হবে। গত বছর সাড়ে ৩৭ লাখ বিয়ের অনুষ্ঠানে প্রায় ৩ দশমিক ৭৫ লাখ কোটি রুপির ব্যবসা হয়েছে।
২৩ নভেম্বর উঠান একাদশীর মধ্য দিয়ে ভারতে বিয়ের মৌসুম শুরু হবে, যা চলবে আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এবার বিয়ের মৌসুমে জমজমাট ব্যবসা হবে বলেই ধারণা ব্যবসায়ীদের। হিন্দু সম্প্রদায়ের বিয়ের নির্দিষ্ট দিনক্ষণ আছে। এবার নভেম্বর মাসের ২৩, ২৪, ২৭, ২৮ ও ডিসেম্বরের ৩, ৪, ৭, ৮, ৯ ও ১৫ তারিখ বিয়ের জন্য শুভ হিসেবে বিবেচিত।
দ্য কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স (সিএআইটি) ধারণা করছে, এবার ৩৮ লাখ বিয়ের অনুষ্ঠানের কল্যাণে ৪ লাখ ৭৪ হাজার কোটি রুপির ব্যবসা হবে—একদিকে যেমন বিয়ের কেনাকাটা, আরেক দিকে আছে বিভিন্ন ধরনের সেবা। সব মিলিয়ে এই বিপুল ব্যবসা হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
সিএআইটির সভাপতি বি সি ভারতীয়া ও মহাসচিব প্রবীণ খান্দেওয়াল বলেছেন, কেবল দিল্লিতেই ৪ লাখের বেশি বিয়ের অনুষ্ঠান হবে। সেখান থেকে ব্যবসা হবে সোয়া লাখ কোটি রুপির।
বিয়ের অনুষ্ঠানের খরচের ভিত্তিতে একধরনের শ্রেণি বিভাগ করেছে সিএআইটি। তাদের আশা, প্রায় ৭ লাখ বিয়ের অনুষ্ঠানে ব্যয় হবে ৩ লাখ রুপি; ৮ লাখ বিয়ের অনুষ্ঠানে ব্যয় হবে ৬ লাখ রুপি; ১০ লাখ অনুষ্ঠানে ১০ লাখ রুপি; ৭ লাখ অনুষ্ঠানে ১৫ লাখ রুপি; ৫ লাখ অনুষ্ঠানে ২৫ লাখ রুপি; ৫০ হাজার অনুষ্ঠানে ৫০ লাখ রুপি; ৫০ হাজার অনুষ্ঠানে ১ কোটি রুপির বেশি।
বিয়ের অনুষ্ঠানে কোন খাতে কত ব্যয় হতে পারে তারও একটি হিসাব দিয়েছে সিএআইটি। তাদের হিসাব অনুসারে, শাড়ি ও কাপড়ে ১০ শতাংশ; গয়না ও অন্যান্য খাতে ১৫ শতাংশ; ইলেকট্রনিকস, ইলেকট্রিক্যাল ও দীর্ঘস্থায়ী পণ্যে ৫ শতাংশ; খাদ্যশস্য, মুদিপণ্য, সবজিতে ৫ শতাংশ; উপহারসামগ্রীতে ৪ শতাংশ ও অন্যান্য খাতে ৬ শতাংশ।
বিয়ের মৌসুমে ভারতের সেবা খাতেরও বাড়বাড়ন্ত হবে বলে জানিয়েছে সিএআইটি। ভেন্যু ও হোটেল বাবদ ব্যয় হবে ৫ শতাংশ; অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় ৫ শতাংশ; সাজসজ্জায় ১২ শতাংশ; ক্যাটারিং সেবায় ১০ শতাংশ; ফুল সাজানোয় ৪ শতাংশ; যাতায়াত বাবদ ৩ শতাংশ; ফটো ও ভিডিওতে ২ শতাংশ; অর্কেস্ট্রা ও ব্যান্ডে ৩ শতাংশ; আলো ও শব্দের জন্য ৩ শতাংশ ও অন্যান্য সেবায় ৩ শতাংশ।
সিএআইটির আশা, বিয়ের মৌসুমের এই গতি বড়দিন ও নতুন বছর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এরপর ১৪ জানুয়ারি সংক্রান্তি থেকে বিয়ের আরেকটি মৌসুম শুরু হবে।