নারীদের জন্য ১০০ কোটি ডলার বরাদ্দ দিচ্ছেন মেলিন্ডা গেটস
শতকোটিপতি জনহিতৈষী হিসেবে পরিচিত মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস নারীদের জীবনমান উন্নয়ন ও লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠায় এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার দান করার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে একবারে নয়, আগামী দুই বছরে এই অর্থ ছাড় করবেন এই শতকোটিপতি।
বিবিসির সংবাদে বলা হয়েছে, এই অর্থের মধ্যে ২০ কোটি ডলার দেওয়া হবে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি সংস্থাকে, যারা নারীর অধিকার ও প্রজননের অধিকার নিয়ে লড়াই-সংগ্রাম করছে।
২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট নারীদের গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার বাতিল করেছেন। নিউইয়র্ক টাইমসের অতিথি কলামে লেখা এক রচনায় মেলিন্ডা গেটস বলেন, নারীদের এই অধিকার রক্ষায় তিনি তাড়না বোধ করছেন এবং সে জন্যই অর্থ দান করছেন।
এদিকে দুই সপ্তাহ আগে মেলিন্ডা গেটস ঘোষণা দেন, তিনি বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন থেকে সরে আসবেন। মেলিন্ডা মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের সাবেক স্ত্রী; তিনি নিজেও মাইক্রোসফটের একজন সহপ্রতিষ্ঠাতা।
পিভোটাল ভেঞ্চার্স নামে মেলিন্ডা গেটসের নিজের প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির মাধ্যমে ২০২৬ সালের মধ্যে এই ১০০ কোটি ডলার ছাড় করা হবে বলে সংবাদে বলা হয়েছে।
এই অর্থের মধ্যে দুই কোটি ডলার বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ১২ জন বৈশ্বিক পর্যায়ের নেতার কাছে স্থানান্তর করবেন মেলিন্ডা গেটস। শর্ত হচ্ছে, সেই অর্থ নেতাদের পছন্দের সংগঠনগুলোর মধ্যে ২০২৬ সালের মধ্যে বণ্টন করতে হবে।
মেলিন্ডা গেটসের কোম্পানি থেকে আরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে যে নারীদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর জন্য ২৫ কোটি ডলার দেওয়া হবে, চলতি বছরের শরৎকালের মধ্যেই এই বরাদ্দ দেওয়া হবে।
মেলিন্ডা গেটস বলেছেন, এই অনুদানের প্রথম গ্রহীতাকে তিনি নিজেই বাছাই করেছেন। সেই সংগঠন যুক্তরাষ্ট্রে নারী অধিকার রক্ষা এবং তাঁদের ক্ষমতা ও প্রভাব বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করবে।
মেলিন্ডা গেটস মনে করছেন, নারী অধিকার রক্ষার মতো আন্দোলন সব সময় অর্থসংকটে ভুগলে নারীদের মূল্য দিতে হবে। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে তাঁর এক বছর বয়সী নাতনি আরও কম অধিকার নিয়ে বেড়ে উঠবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
যেসব সংগঠন এই অনুদান পাচ্ছে, তাদের মধ্যে একটি হলো সেন্টার ফর রিপ্রোডাক্টিভ রাইটস। এ সংগঠন নারীদের গর্ভপাতের অধিকার রক্ষার পক্ষে। এই সংগঠনের ৫০ জন নারী আদালতের গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার রায়ের বিরুদ্ধে এবং নারীদের অন্যান্য প্রজনন অধিকারের পক্ষে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে আইনি লড়াই করছেন।
অনুদান পাওয়া অন্যান্য সংগঠনের মধ্যে আছে ন্যাশনাল ডোমেস্টিক ওয়ার্কার্স অ্যালায়েন্স, যারা লাখ লাখ ন্যানি (শিশু লালন-পালনকারী), গৃহকর্মী, গৃহ স্বাস্থ্যকর্মী এবং এ ধরনের কর্মীদের প্রতিনিধিত্ব করে।
মেলিন্ডা গেটস বলেছেন, এখন নারী সংগঠনে অর্থায়ন থেকে যে প্রশ্নের উদয় হয় তা হলো, এত দিন কেন সেখানে অর্থায়ন করা হয়নি। নারীরা কর্মশক্তির অর্ধেকেরও বেশি, ভোটারদের ৫০ শতাংশ ও সমাজের ৭০ শতাংশ সেবা তাঁরাই দিয়ে থাকেন, অথচ তাঁরা বরাবরই বঞ্চিত হয়ে আসছেন।