সৌদি তেল কোম্পানি আরামকোর বেশির ভাগ শেয়ার কিনেছে বিদেশিরা
দ্বিতীয় পর্যায়ে সৌদি তেল কোম্পানি আরামকোর যে শেয়ার বাজারে ছাড়া হয়েছে, তার বেশির ভাগ আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা কিনেছে। কোম্পানিটি এ কথা জানিয়েছে। এ শেয়ার বিক্রি থেকে ১ হাজার ১২০ কোটি ডলার আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, আরামকোর শেয়ার বিক্রির এই অর্থ সৌদি আরবের জন্য আর্থিক স্বস্তি নিয়ে আসবে। কারণ, দেশটি তেলবহির্ভূত অর্থনীতি গড়ে তোলার অংশ হিসেবে বড় ধরনের নির্মাণযজ্ঞ চালাচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে অবকাশযাপন কেন্দ্র ও স্টেডিয়াম।
আরামকোর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য যে শেয়ার ছাড়া হয়েছে, তার বেশির ভাগই দেশের বাইরের বিনিয়োগকারীদের নামে বরাদ্দ করা হয়েছে। আরামকোর শেয়ারের দাম বেড়ে রোববার দিন শেষে ২৮ দশমিক ৬০ সৌদি রিয়ালে বিক্রি হয়েছে। ফলে কোম্পানিটির বাজার মূলধন হয়েছে ১ লাখ ৮৫ হাজার কোটি ডলার।
সূত্রগুলো এএফপিকে জানিয়েছে, শেয়ারের ৫৮ শতাংশ আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের বরাদ্দ করা হয়েছে। কোম্পানিটি প্রথম যখন বাজারে শেয়ার ছেড়েছিল, তখন ২৩ শতাংশ শেয়ার বিদেশিদের কাছে বিক্রি করা হয়েছিল। তখন আর্থিক মূল্যে ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি দামের শেয়ার বাজারে ছাড়া হয়েছিল।
সৌদি আরবের বাইরে থেকে শেয়ার কেনার জন্য যত আবেদন এসেছিল, তার মধ্যে ৭০ শতাংশ এসেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে। বাকি আবেদন আসে জাপান, হংকং ও অস্ট্রেলিয়া থেকে।
গত ৩০ মে রাষ্ট্রমালিকানাধীন আরামকো জানিয়েছিল, তারা ১৫৪ কোটি শেয়ার বিক্রি করবে। এটি কোম্পানির মোট শেয়ারের শূন্য দশমিক ৬৪ শতাংশ। এই শেয়ার বিক্রি হয়েছে সৌদি স্টক এক্সচেঞ্জে। শুক্রবার আরামকো জানায়, দ্বিতীয় পর্যায়ে ছাড়া এই শেয়ারের প্রতিটির দাম হবে ২৭ দশমিক ২৫ সৌদি রিয়াল।
সৌদি আরবে ভিশন ২০৩০ কর্মসূচির আওতায় যে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, তার প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কেমন, তা এই শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে বোঝা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। এই কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন গিগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে নিওম শহর, মরুভূমির মধ্যে যা হবে একটি পরিকল্পিত ভবিষ্যতের শহর।
আরামকো জানিয়েছে, ১০ শতাংশ শেয়ার খুচরা বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। এর জন্য ১৩ লাখ আবেদন পড়েছিল। একটি সূত্র জানিয়েছে, আরামকোর শেয়ার কেনার জন্য মোট ৬ হাজার ৫০০ কোটি ডলার মূল্যমানের আবেদন পড়েছিল।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় অপরিশোধিত তেল রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরব। দ্বিতীয়বারের মতো শেয়ার বিক্রির পর আরামকোয় সরকারের অংশীদারত্ব দাঁড়িয়েছে ৮১ দশমিক ৫ শতাংশ।
রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান চালানোর পর ২০২২ সালে আরামকো রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা করে। সে সময় তেলের দাম বেড়ে যায়। ফলে প্রায় এক দশকের মধ্যে সৌদি আরবে বাজেট উদ্বৃত্ত হয়েছিল। কিন্তু তেলের দাম আবার কমে যাওয়া ও উৎপাদন কাটছাঁট করার পর কোম্পানির মুনাফা এক-চতুর্থাংশ কমে যায়।