আবারও ঋণখেলাপি হওয়ার উপক্রম যুক্তরাষ্ট্রের
আবারও ঋণখেলাপি হওয়ার উপক্রম হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেছেন, ঋণখেলাপি হওয়া ঠেকাতে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়কে আগামী ১৪ জানুয়ারির মধ্যে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। গত শুক্রবার আইনপ্রণেতাদের লেখা এক চিঠিতে এ কথা বলেছেন তিনি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, কংগ্রেস সদস্যদের লেখা চিঠিতে ইয়েলেনের আহ্বান, যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ঋণদাতাদের পূর্ণ আস্থা ও দেশটির মর্যাদা রক্ষা করতে হবে।
ইয়েলেন আরও বলেছেন, আগামী ২ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ ৫৪ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার কমতে পারে। এর মধ্যে কিছু সিকিউরিটিসের সুদ পরিশোধ করার কথা, বাজারে যেসব সিকিউরিটিসের লেনদেন হয় না। এসব সিকিউরিটিস ফেডারেল ট্রাস্ট ফান্ডের অধীন আছে; কিছু মেডিকেয়ার তহবিলের অর্থ পরিশোধের জন্য এই ঋণ নেওয়া হয়েছিল।
এরপর আগামী ১৪ থেকে ২৩ জানুয়ারির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণসীমা নতুন উচ্চতায় উঠতে পারে। তখন অর্থ মন্ত্রণালয়কে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।
দুই বছর ধরেই জাতীয় ঋণ নিয়ে বিপাকে আছে যুক্তরাষ্ট্র। ঋণসীমা অতিক্রম করে যাওয়ায় ২০২৩ সালে বাজেটসংক্রান্ত এক চুক্তি হয়। সেখানে ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত ঋণসীমা স্থগিত করা হয়। এরপর অর্থ মন্ত্রণালয় আরও কয়েক মাস অর্থ পরিশোধ করতে পারবে, কিন্তু আগামী বছরের কোনো এক সময় মার্কিন কংগ্রেসকে বিষয়টি আমলে নিতে হবে।
সংবাদে বলা হয়েছে, সরকার ব্যবস্থা না নিলে একসময় যুক্তরাষ্ট্র ঋণখেলাপি হয়ে যেতে পারে। এ কারণে অর্থনীতিতে গুরুতর সংকট সৃষ্টি হতে পারে।
মার্কিন সরকার মোট কী পরিমাণ ঋণ করতে পারবে, তার একটি সীমা কংগ্রেসে নির্ধারণ করা থাকে। ২০২৩ সালে দেশটির জাতীয় ঋণ সেই সীমা অতিক্রম করে গেলে কংগ্রেস ঋণসীমা স্থগিত করে। মার্কিন সরকারের আয়ের চেয়ে ব্যয় সব সময়ই বেশি। আইনপ্রণেতাদের নিয়মিত এই ঋণের সীমা আমলে নিতে হয়। কিন্তু অনেক রাজনীতিক ঋণের সীমা বৃদ্ধির বিষয়ে অনাগ্রহী, সে কারণে বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং।
যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৩৯ সালে প্রথম জাতীয় ঋণসীমা নির্ধারিত হয় ৪৫ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। এরপর এখন পর্যন্ত ১০৩ বার এই ঋণসীমা বাড়াতে হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে দেশটির জাতীয় ঋণ অনুমোদিত সীমার ৯৮ শতাংশে উঠে যায়; ২০০১ সালে যা ছিল মাত্র ৩২ শতাংশ।