এক ডলারে মিলছে ২৩৯ পাকিস্তানি রুপি
পাকিস্তানের দুর্গতি যেন শেষ হচ্ছে না। ডলারের সাপেক্ষে দেশটির মুদ্রার দরপতন অব্যাহত আছে। গতকাল দেশটির আন্তব্যাংক বাজারে এক ডলারের মান দাঁড়ায় প্রায় ২৪০ রুপি।
পাকিস্তানের ফরেক্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যানুসারে, গতকাল রুপির দর কমেছে ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ বা ৪ দশমিক ৪ রুপি। তবে এটাই ডলারের সর্বোচ্চ দর নয়, এর আগে ১ ডলার ২৪০ রুপিতেও বিক্রি হয়েছে পাকিস্তানে।
এক্সচেঞ্জ কোম্পানিস অ্যাসোসিয়েশন অব পাকিস্তানের সাধারণ সম্পাদক জাপল পারাচা এই দায় সরাসরি চাপিয়েছেন রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সরকারের উদ্যোগহীনতার ওপর।
পাকিস্তানের পত্রিকা দ্য ডনকে জাপল পারাচা বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালো নয়, কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর এ নিয়ে মাথাব্যথা নেই বললেই চলে। তারা শুধু নিজেদের সরকার বাঁচাতে ব্যস্ত।
এদিকে আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থাগুলো পাকিস্তানের ঋণমান ইতিমধ্যে হ্রাস করেছে। এদিকে এই বিপর্যয়ের মধ্যে দেশটি আন্তর্জাতিক মুদ্রাভান্ডারের কাছে যে ঋণ চেয়েছিল, তা পেতে আরও সময় লাগবে। ঋণ দেওয়ার জন্য আইএমএফ যথারীতি কিছু শর্ত আরোপ করেছে। এবার ঋণ ছাড় করার আগে তারা আরও শর্ত দেবে কি না, তা স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে দ্য ডন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, পাকিস্তানের মুদ্রার দরপতন রোধে যা করা উচিত, তা করা হচ্ছে না। অব্যবস্থাপনা ও গুরুত্বের অভাবে আর্থিক পরিস্থিতির এতটা অবনতি হয়েছে।
এদিকে সপ্তাহের শুরুতে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতা ইসমাইল বলেন, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে রুপির ওপর এই চাপ থাকবে না। সম্প্রতি পাকিস্তানের পরামর্শক সেবাপ্রতিষ্ঠান তাদাদলাবের মোশাররফ জাইদির সঙ্গে আলাপকালে মিফতাহ ইসমাইল বলেন, শিগগিরই এমন পরিস্থিত হবে যখন পাকিস্তান থেকে যত ডলার বেরিয়ে যায়, তার চেয়ে বেশি ডলার ঢুকবে। এতে মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল হবে। পাকিস্তান সার্বভৌম ঋণের সংকটে পড়বে না বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে অনেক কিছু করছি। ফলে শিগগিরই পাকিস্তানে ডলারপ্রবাহ বৃদ্ধি পাবে।’
এদিকে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সম্প্রতি সতর্ক করে বলেছেন, তাঁর দেশ শ্রীলঙ্কার অবস্থা থেকে খুব বেশি দূরে নয়। নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে এ মন্তব্য করেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের চেয়ারম্যান ইমরান।
ইমরান বলেন, আসিফ আলী জারদারি ও শরিফ পরিবারের নেতৃত্বাধীন মাফিয়ারা নিজেদের অবৈধ সম্পদ বাঁচাতে মাত্র তিন মাসের মধ্যে পাকিস্তানকে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিকভাবে নতজানু করে ফেলেছে। এই পরিস্থিতিতে জনগণ শিগগিরই পথে নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন ইমরান।