লভ্যাংশ কমলেও ৬৩ শতাংশ আয় বেড়েছে মাইক্রোসফটপ্রধান সত্য নাদেলার
লভ্যাংশ নেওয়া কমিয়েছেন মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সত্য নাদেলা। তারপরও গত বছর তাঁর আয় বেড়েছে ৬৩ শতাংশ। ২০২৩ সালে মোট ৭ কোটি ৯১ লাখ ডলার আয় করেছেন সত্য নাদেলা। লভ্যাংশে বড় ধরনের কাটছাঁট না হলে তাঁর আয় আরও বাড়ত বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বেতন, বোনাস, শেয়ারসহ কোম্পানি থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা পেয়ে থাকেন সত্য নাদেলা। কিন্তু গত বছর মাইক্রোসফটে সাইবার নিরাপত্তাত্রুটির কারণে সত্য নাদেলা তাঁর প্রাপ্ত লভ্যাংশের একটি অংশ কমানোর অনুরোধ করেছিলেন। তা না হলে নাদেলার আয় আরও ৫০ লাখ ডলার বাড়ত।
বিশ্বের অন্যান্য প্রযুক্তি কোম্পানির মতো মাইক্রোসফটও চলতি বছর বিপুলসংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করেছে; এর মধ্যে তাদের গেমিং বিভাগের অনেক কর্মীও আছেন।
মাইক্রোসফটের বেতন নির্ধারণ কমিটি শেয়ারহোল্ডারদের বলেছে, কোম্পানি বেশ ভালো করেছে এবং নাদেলাও এ বিষয়ে একমত।
কমিটি আরও জানিয়েছে, মাইক্রোসফট যে কিছু সাইবার হামলার শিকার হয়েছে, তার জন্য নাদেলা ব্যক্তিগতভাবে দায়বোধ করেন। সে জন্য তিনি কমিটির কাছে লভ্যাংশ কমানোর অনুরোধ করেছিলেন।
মাইক্রোসফটের বেতন নির্ধারণ কমিটি বলেছে, সত্য নাদেলার লভ্যাংশ ও প্রণোদনা অর্ধেকের বেশি কমিয়ে ৫২ লাখ ডলার করা হয়েছে; এই অঙ্ক তাঁর মোট আয়ের ৭ শতাংশের কম। গত বছর তাঁর আয়ের বড় অংশই এসেছে স্টক থেকে, যার পরিমাণ ৭ কোটি ১২ লাখ ডলার।
গত বছরের জুলাই মাসে এক সাইবার হামলার শিকার হয়েছিল মাইক্রোসফট। হ্যাকাররা মাইক্রোসফটের সার্ভারে ঢুকে সরকারি সংস্থাসহ অন্তত ২৫টি প্রতিষ্ঠানের ই-মেইলে ঢুকে যায়। তখন মাইক্রোসফট জানিয়েছিল, চীন থেকে সেই হামলা করা হয়েছে; যদিও লন্ডনের চীন দূতাবাস সেই অভিযোগ ‘ভুল তথ্য’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল।
চলতি বছরের জুলাইয়ে বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তিবিভ্রাট দেখা দেয়। সে ঘটনায় মাইক্রোসফটের অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ব্যবহার করা অধিকাংশ কম্পিউটার আক্রান্ত হয়। এতে এভিয়েশনসহ অনেক সেবা খাত ক্ষতির মুখে পড়ে; যদিও সেটি সাইবার হামলা ছিল না। তবে জুলাইয়ের শেষ নাগাদ আরেকটি হামলার শিকার হয় মাইক্রোসফট। সে জন্য তারা ক্ষমতাও চায়।
গবেষণা সংস্থা হাই পে সেন্টারের পরিচালক লুক হিল্ডইয়ার্ড বলেন, ভাসা–ভাসাভাবে দেখলে মনে হয়, নাদেলার এই আয় ঠিক আছে। কিন্তু একটি প্রশ্ন থেকে যায়; তা হলো, সত্য নাদেলার মতো ধনী মানুষকে এত বেতন-ভাড়া দেওয়া কতটা যৌক্তিক। তাঁর এমনিতেই যে সম্পদ আছে, তা এই জীবনেও শেষ করতে পারবেন না।
লুক হিল্ডইয়ার্ড আরও বলেন, কর্মী, গ্রাহকসহ সবার অবদানের ভিত্তিতেই মাইক্রোসফটের এই সফলতা; তাই এই অর্থ আরেকটু সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া উচিত ছিল।
প্রযুক্তির খাতের অন্য কর্তাদের মধ্যে অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক গত বছর ৬৩ দশমিক ২ মিলিয়ন বা বা ৬ কোটি ৩২ লাখ ডলার আয় করেছেন। এনভিডিয়ার প্রধান নির্বাহী হ্যানসেং হুয়াং ২০২৪ অর্থবছরে পেয়েছেন ৩ কোটি ৪২ লাখ ডলার। তবে সবার ওপরে আছেন টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। তাঁর বেতন-ভাতার পরিমাণ ৫৬ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ৬০০ কোটি ডলার।