টুইটারের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসির বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ
আবারও চাঞ্চল্যকর সংবাদ নিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিনডেনবার্গ। প্রতিষ্ঠানটি এবার ব্লক ইনকরপোরেশন ও টুইটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা জ্যাক প্যাট্রিক ডরসির বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ধরেছে। তাদের নতুন প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে জ্যাক ডরসি সংবাদের শিরোনাম হওয়ার পর এক দিনেই তাঁর ৫২৬ মিলিয়ন বা ৫২ কোটি ৬০ লাখ ডলার খোয়া গেছে। বিশেষ করে ব্লক ইনকরপোরেশনের শেয়ারের দাম এক দিনেই ২২ শতাংশ কমেছে। খবর বিবিসির।
হিনডেনবার্গের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ব্লক ইনকরপোরেশন পুঁজিবাজারে তাদের শেয়ারের দাম নির্ধারণে কারসাজি করেছে। এ ছাড়া এই প্রতিষ্ঠান অনেক প্রতারণার ঘটনাও উপেক্ষা করে গেছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে ব্লক। গতকাল বৃহস্পতিবার হিনডেনবার্গের প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদন প্রকাশের পর জ্যাক ডরসি পুঁজিবাজারে গতকাল ৫২৬ মিলিয়ন বা ৫২ কোটি ২৬ লাখ ডলার ‘খুইয়েছেন’। ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার্স সূচক অনুযায়ী বিশ্বের বিলিয়নিয়ার বা অতিধনীর তালিকায় তাঁর সম্পদের নিট মূল্য ১১ শতাংশ কমে ৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ৪৪০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।
হিন্দুস্তান টাইমস–এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে ব্লক ইনকরপোরেশনে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে জালিয়াতি করেছে জ্যাক ডরসির সংস্থা। পাশাপাশি সরকারকেও ‘ধোঁকা’ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি হিনডেনবার্গের। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, একাধিক নিয়ম ভঙ্গ করেছে ব্লক ইনকরপোরেশন। নিজেদের ‘মেট্রিক’ (বাণিজ্যের পরিমাণ বা লেনদেন ও ব্যবহারকারীর সংখ্যা) জালিয়াতি করে ফুলেফেঁপে উঠেছিল ব্লক। এই আবহে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গেও প্রতারণা করা হয়েছে বলে দাবি হিনডেনবার্গের।
হিনডেনবার্গের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, জালিয়াতি করে ব্লকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এমনকি রিপোর্টে এ–ও দাবি করা হয়েছে যে ব্লক ইনকরপোরেশনের সাবেক কর্মীরাই নাকি প্রতিষ্ঠানটির ভুয়া অ্যাকাউন্টের কথা হিনডেনবার্গের কাছে স্বীকার করেছেন। এদিকে হিনডেনবার্গের দাবি, এই ভুয়া অ্যাকাউন্টগুলোর বিষয়টি ব্লক জানত। তারপরও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
ব্লকের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী জ্যাক ডরসি বলেছেন যে এই ‘ভুল ও বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদনের’ জন্য হিনডেনবার্গের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবেন তিনি।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনেছিল প্রতিষ্ঠানটি। হিনডেনবার্গ রিসার্চের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পরে গৌতম আদানির প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলার কমে যায়। এর ফলে ব্লুমবার্গের বিশ্বের অতিধনী তথা শতকোটিপতির (বিলিয়নিয়ার) তালিকায় গৌতম আদানির অবস্থান ২ থেকে ৪০–এ নেমে যায়। এখন অবশ্য তিনি ২১তম অবস্থানে আছেন। বর্তমানে তাঁর সম্পদের নিট মূল্য ৬০ বিলিয়ন বা ৬ হাজার কোটি ডলার।