আগামী কয়েক মাসে বাংলাদেশের রিজার্ভ স্থিতিশীল হবে: মুডিস
আগামী কয়েক মাস বাংলাদেশের রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা মুডিস। অংশত আমদানি নিয়ন্ত্রণের পর চলতি হিসাবে উদ্ধৃত্ত থাকার কারণে রিজার্ভ স্থিতিশীল হবে বলে মনে করে ওই প্রতিষ্ঠান। আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বারবার ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি গত দুই বছর ধরে ডলারের মজুত ক্রমাগত কমলেও মুডিস এই পূর্বাভাস দিয়েছে।
মুডিস বলেছে, গত জানুয়ারি মাসে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার পর ব্যবসা-বাণিজ্যের অনিশ্চয়তা ধীরে ধীরে কমছে। সেই সঙ্গে আমদানিতে এখনো বিধিনিষেধ থাকায় চলতি হিসাবের স্থিতি ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ দেওয়া চলমান রাখায় রিজার্ভে ইতিবাচক দিক দেখা যাচ্ছে।
মুডিস বাংলাদেশের ঋণমান নিয়ে পর্যায়ক্রমিক পর্যালোচনার পর প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি স্থিতিশীল রাখাসহ ঋণমান ‘বি ওয়ান’ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি চলমান রাখতে এই ইতিবাচক ধারা জরুরি বলে মনে করে মুডিস। তবে স্থিতিশীলতা আছে বলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ঋণসহায়তা পাচ্ছে।
২০২২ সালের জুনের আগে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ৪০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এর পর থেকে প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কমতে থাকে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি খরচ বেড়ে যায়। ফলে রিজার্ভ কমে যায়। এ সময় টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে।
মুডিসের আশা, মহামারির আগের সময়ের তুলনায় বাংলাদেশের আর্থিক পরিস্থিতি দুর্বল হলেও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণসহায়তা রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সক্ষম বাংলাদেশের একটি পোশাকশিল্প রয়েছে। দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতার পেছনে এ খাতের অবদান আছে।
মুডিস আরও বলছে, জোরালো প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বাংলাদেশের ঋণ পরিস্থিতি ভারসাম্যপূর্ণ রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। রাজস্বের তুলনায় বাড়তি ঋণ ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতায় বাংলাদেশের আর্থিক স্বস্তি কমেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রতিযোগিতামূলক পোশাকশিল্প দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের জিডিপি ও রপ্তানি আয়ে বড় ভূমিকা পালন করবে। তবে পোশাকের বৈশ্বিক চাহিদা কমে যাওয়া ও আর্থিক হিসাবের ঘাটতির কারণে বাংলাদেশের অবস্থান দুর্বল হয়েছে। এ কারণে ঋণমানের ওপর চাপ বেড়েছে।
এ ছাড়া রাজস্ব আদায়ে দুর্বলতা, সক্ষমতার তুলনায় বেশি সুদ ব্যয় ও ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণের কারণে বাংলাদেশের ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা কমে যাচ্ছে। এ বাস্তবতায় তারা বলেছে, এ পরিস্থিতি দুই থেকে তিন বছর আগের তুলনায় নাজুক থাকবে।
মুডিস আরও বলেছে, মূল্যস্ফীতির চাপ থাকায় দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতিও তুলনামূলকভাবে কমবে।