চীন–রাশিয়ার ‘গোপন লেনদেন’ বাড়ছে, ব্যবহার হচ্ছে ক্রিপ্টোকারেন্সিও
দক্ষিণ চীনের এক অ্যাপ্লায়েন্স কোম্পানি রাশিয়ায় পণ্য পাঠাতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে। বিষয়টি পণ্যের গুণগত মান–সম্পর্কিত নয়। চীনের বড় বড় ব্যাংকগুলো রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেন সীমিত করেছে, সে কারণেই এই বিপত্তি। এসব ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ভয়ে আছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার পণ্য পাঠাতে চীনের এই কোম্পানি রাশিয়া-চীন সীমান্তে মুদ্রা বিনিময়কারীদের দ্বারস্থ হয়েছে। কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা ওয়াং নিজেই এ তথ্য দিয়েছেন। এই ব্যক্তি নিজের ব্যক্তিগত নাম ব্যবহার করেন না; বরং তিনি পারিবারিক পদবি ব্যবহার করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা রুশ সরকার এবং সে দেশের কোম্পানিগুলোর ওপর একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
এই পরিস্থিতিতে চীনের বড় ব্যাংকগুলো ভয় পাচ্ছে, রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেন করলে সেই নিষেধাজ্ঞার আঁচ তাদের গায়েও লাগবে। ওয়াশিংটন সব সময় অভিযোগ করে, চীন মস্কোর যুদ্ধের তহবিল জোগাতে সহায়তা করছে। সে কারণে এখন চীনের কোম্পানিগুলো রাশিয়ার সঙ্গে বেসামরিক বাণিজ্য করতেও ভয় পাচ্ছে। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত সাতটি ব্যাংকিং ও বাণিজ্যিক সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, এই পরিস্থিতি চীনের রপ্তানিকারকদের জন্য সমস্যা হয়ে উঠছে।
চীনের বড় ব্যাংকগুলো রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেনে আগ্রহী না হওয়ায় চীনের রপ্তানিকারকেরা ছোট ব্যাংক ও এমনকি অবৈধ মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করছে। মুদ্রা বিনিময়কারী ও নিষিদ্ধ ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারেও বাধ্য হচ্ছে তারা।
এ বিষয়ে ওয়াং বলেন, আনুষ্ঠানিক মাধ্যমে যথাযথভাবে ব্যবসা করা যায় না। বড় ব্যাংকগুলো এখন অর্থ পরিশোধ করতে এক মাসের বেশি সময় নিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে রপ্তানিকারকেরা অবৈধ পথে লেনদেন করতে বাধ্য হচ্ছেন।
চীনের দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলের এক বাণিজ্য সংগঠনের নেতারা বলেছেন, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে রাশিয়া ও চীনের মধ্যে এ ধরনের গোপন লেনদেন আরও বাড়বে। কিন্তু এই পদ্ধতিতে লেনদেনের বড় ঝুঁকি আছে।
এদিকে মস্কোভিত্তিক এক রুশ ব্যাংকার বলেছেন, ক্রিপ্টোকারেন্সি ২০২১ সালে চীনে নিষিদ্ধ হলেও এটাই হয়তো লেনদেনের একমাত্র উৎস হয়ে উঠতে পারে। চীনের বড় ও ছোট ব্যাংকের কেওয়াইসির দরজা পেরিয়ে যাওয়া কঠিন।
যাঁরা এ বিষয়ে রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলেছেন, তাঁরা সবাই নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছেন। তবে ঠিক কী পরিমাণ লেনদেন বড় বড় ব্যাংকগুলো থেকে ছুটে গেছে, সে বিষয়ে রয়টার্স নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি।