সংকুচিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাত, সাত মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন
ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন সংকুচিত হয়েছে। কর্মী ছাঁটাইয়ের মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির উৎপাদন খাত সংকুচিত হয়েছে—সাত মাসের মধ্যে যা এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে। যদিও উৎপাদন খাত ঘুরে দাঁড়াবে, এমন লক্ষণ আছে।
দ্য ইনস্টিটিউট ফর সাপ্লাই ম্যানেজমেন্টের (আইএসএম) সূত্রে রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসে এ নিয়ে টানা তিন মাস গ্রাহকদের জন্য রক্ষিত পণ্যের মজুত কমেছে। যদিও আইএসএম মনে করছে, এই পরিস্থিতি একদিক থেকে খারাপ নয়। ভবিষ্যতে যে মজুত বা ক্রেতাদের কেনাকাটা বাড়বে, এটি তার লক্ষণ। সেই সঙ্গে দেশটির উৎপাদকেরাও একই সুরে কথা বলছেন। অনেকেই বলেছেন, শেষ পর্যন্ত চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। অনেকেই আবার ইতিমধ্যে বলেছেন, বেচাকেনা বেড়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েলস ফার্গো ব্যাংকের অর্থনীতিবিদ শ্যানন গ্রেইন রয়টার্সকে বলেছেন, ‘উৎপাদন খাতে প্রাণসঞ্চার হচ্ছে—এমন আশাবাদী হওয়ার মতো লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
আইএসএম জানিয়েছে, উৎপাদন খাতের পিএমআই বা পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স ফেব্রুয়ারি মাসে ৪৭ দশমিক ১-এ নেমে এসেছে; জানুয়ারি মাসে যা ছিল ৪৯ দশমিক ১। এ নিয়ে টানা ১৬ মাস যুক্তরাষ্ট্রের পিএমআই সূচক ৫০-এর নিচে। এর অর্থ হলো, উৎপাদন খাত সংকুচিত হয়েছে। ২০০০ সালের আগস্ট থেকে ২০০২ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত টানা সংকোচনের পর এখন সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সংকুচিত হচ্ছে দেশটির উৎপাদন খাত।
অর্থনীতিবিদদের নিয়ে রয়টার্সের জরিপে ধারণা করা হয়েছিল, ফেব্রুয়ারি মাসে এই সূচক ৪৯ দশমিক ৫-এ উঠবে। সাধারণত পিএমআইয়ের কোনো উপাদানের মান ৪৫ বা তার নিচে নেমে গেলে বোঝা যায়, সামগ্রিকভাবে উৎপাদন খাত দুর্বল।
আইএসএম আরও বলেছে, সামগ্রিকভাবে পিএমআইয়ের মান ৪২ দশমিক ৫-এর নিচে নেমে গেলে বোঝা যায়, সামগ্রিকভাবে অর্থনীতি সংকোচনের মুখে আছে। আগে এই মান ধরা হতো ৪৮ দশমিক ৭, অর্থাৎ এর নিচে গেলে ধরে নিতে হবে যে অর্থনীতি সংকোচনের মুখে আছে। সেটা এখন কমিয়ে ৪২ দশমিক ৫ করা হয়েছে। তবে অর্থনীতির সম্প্রসারণ অব্যাহত আছে। বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে তা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩ দশমিক ২ শতাংশ সম্প্রসারিত হয়েছে।
প্রায় দুই বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করতে যুক্তরাষ্ট্রে নীতি সুদহার বাড়ানো হচ্ছে। এতে দেশটিতে ঋণের সুদহার বেড়েছে এবং পরিণামে বাজারে পণ্যের চাহিদা কমেছে। রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, আইএসএম উৎপাদন খাতের একটু বেশি হতাশাজনক চিত্র এঁকেছে। দেশটির অর্থনীতিতে উৎপাদন খাতের হিস্যা মাত্র ১০ দশমিক ৩ শতাংশ।