চ্যাটজিপিটির ব্যবহার বাড়ছে, শঙ্কা না সম্ভাবনা

চ্যাটজিপিটি

গত বছরের নভেম্বর মাসে ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি। তখন থেকেই এ নিয়ে শোরগোল চলছে। অনেক বিশ্লেষকই বলেছেন, চ্যাটজিপিটি অনেক মানুষের কাজ কেড়ে নেবে।

এর পাল্টা মতও দিয়েছেন অনেকে। তাঁদের ভাষ্য, প্রযুক্তি মানুষের কাজ কেড়ে নিলেও অনেক নতুন কাজ তৈরি করবে।

আপাতত চ্যাটজিপিটি নিয়ে প্রথম দলের বিশ্লেষকদের সন্দেহ সত্যি হতে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনবিসির এক সংবাদে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

অনেক কোম্পানি কাজের গতি বাড়াতে কোডিংয়ের কাজেও চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করছে। এতে যে অর্থ বেঁচে যাচ্ছে, তা দিয়ে কর্মীদের নতুনভাবে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বা আরও দক্ষ কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে।
আরও পড়ুন

রেজিউমবিল্ডার নামের এক কর্মসংস্থান-সংক্রান্ত সেবাদানকারী সংস্থার জরিপে যে তথ্য পাওয়া গেছে, তা আশঙ্কিত হওয়ার মতোই। ফেব্রুয়ারি মাসে এই সংস্থা এক হাজার কোম্পানির ওপর জরিপ চালিয়ে বলেছে, এদের মধ্যে অর্ধেক কোম্পানি চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করছে। ৩০ শতাংশ বলেছে, তারা এই চ্যাটবট ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে।

এসব কোম্পানি চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে কর্মীদের চাকরিতে করণীয়ের তালিকা এবং
কর্মীদের জীবনবৃত্তান্ত তৈরি করছে।

বিষয়টি হচ্ছে, কোম্পানি এসব কাজে প্রযুক্তি ব্যবহার করে অর্থ বাঁচাতে পারে। যে অর্থ তারা অন্যান্য কৌশলগত খাতে ব্যবহার করতে পারে। জরিপের তথ্যানুসারে, যেসব কোম্পানি বা ফার্ম এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, তাদের মধ্যে অর্ধেক কোম্পানি মাসে ৫০ হাজার ডলার বাঁচাতে পারছে। এদের মধ্যে ১০ ভাগ কোম্পানি বলেছে, তারা মাসে এক লাখ ডলার বাঁচাতে পারছে।

লেখালেখি ছাড়াও কোডিংয়ের জগতেও প্রভাব ফেলছে চ্যাটজিপিটি। জরিপে জানা গেছে, অনেক কোম্পানি কাজের গতি বাড়াতে কোডিংয়ের কাজেও চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করছে। এতে যে অর্থ বেঁচে যাচ্ছে, তা দিয়ে কর্মীদের নতুনভাবে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বা আরও দক্ষ কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে।

রেজিউমবিল্ডার্সের মুখ্য ক্যারিয়ার পরামর্শক স্টেসি হেলার সিএনবিসিকে বলেছেন, এটি বরফখণ্ডের চূড়ামাত্র, সামনে আরও অনেক কিছু অপেক্ষা করছে। তিনি আরও বলেন, এই জরিপ করা হয়েছে ফেব্রুয়ারি মাসে। এর মধ্যে
আরও অনেক কোম্পানি চ্যাটজিপিটি ব্যবহার শুরু করেছে।

যথাযথ নির্দেশনা দেওয়া হলে চ্যাটজিপিটি অনেক কাজই করতে পারে। আবেদনপত্র লেখা থেকে শুরু করে গল্প-কবিতা-নিবন্ধ লেখা, কোড তৈরি করা ও গণিতের জটিল সমস্যার সমাধানও সে করতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই মানুষের মধ্যে চাকরি হারানোর আশঙ্কা প্রবল হচ্ছে।

আরও পড়ুন

কিন্তু অনেকে আবার নতুন প্রযুক্তিকে নতুন সম্ভাবনা হিসেবে দেখতে চান। তাঁরা মনে করেন, এটি নিয়োগদাতা ও চাকরিপ্রার্থীদের জন্য নতুন সুযোগ। উল্লিখিত জরিপে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলো বলেছে, যে তরুণেরা চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করেন, তাঁরা অন্যদের তুলনায় অধিকতর দক্ষ।

এই পরিপ্রেক্ষিতে স্টেসি হেলার মনে করেন, ফটোশপ আসার পরও মানুষ ভেবেছিল, চাকরি গেল গেল। কিন্তু আদতে তেমন কিছু হয়নি। চ্যাটজিপিটিও নতুন প্রযুক্তিমাত্র। কিন্তু অনেকে মনে করেন, মানুষ আর কত প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাওয়াবে, একসময় প্রযুক্তিই হয়তো রাজত্ব করবে।