বাণিজ্যযুদ্ধে কেউ জিতবে না, ট্রাম্পের শুল্কহুমকির পর চীনের প্রতিক্রিয়া

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনরয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক শুল্ক আরাপের হুমকির পর চীন বলেছে, বাণিজ্যযুদ্ধে কেউই জয়ী হতে পারবে না। ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব নেওয়ার পর চীন থেকে আমদানি করা পণ্যে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ার পর তারা এ মন্তব্য করে।

চীন দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউ এক বিবৃতিতে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাঁর বিশ্বাস, চীন-যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা প্রকৃতপক্ষে পারস্পরিক লাভজনক। তিনি আরও বলেন, বাণিজ্যযুদ্ধের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়; কোনো পক্ষই এতে বিজয় অর্জন করতে পারবে না। চীন সব সময় আলোচনা ও সহযোগিতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে প্রস্তুত, যদিও নিজের অধিকার রক্ষায় পিছপা হবে না চীন। খবর রয়টার্স।

নির্বাচনী প্রচারের সময় থেকেই ট্রাম্প বলে আসছেন, নির্বাচিত হলে তিনি চীনসহ অন্যান্য দেশের পণ্যে শুল্ক আরোপ করবেন। এরপর গতকাল সোমবার তিনি পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, ক্ষমতায় যাওয়ার প্রথম দিনেই তিনি চীন, কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবেন। তাঁর এ কথায় উত্তেজনা বেড়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, চীন থেকে অবৈধ ওষুধ, বিশেষত ফেন্টানাইল যুক্তরাষ্ট্রে আসা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এই শুল্ক থাকবে।

বিবৃতিতে লিউ উল্লেখ করেছেন, গত বছর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মধ্যে চুক্তি হওয়ার পর চীন ওষুধ পাচার বন্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-সম্পর্কিত মাদকবিরোধী আইন প্রয়োগে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা মার্কিন পক্ষকে জানানো হয়েছে।

জুন মাসে চীনের প্রধান কৌঁসুলি আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের ওষুধ পাচার মোকাবিলায় মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান। একই সময়ে বেইজিং ও ওয়াশিংটন মাদকবিরোধী যৌথ তদন্ত শুরু করে। আগস্ট মাসে যৌথ মাদকবিরোধী দলের বৈঠকের কয়েক দিন পর চীন ঘোষণা করে, তারা ফেন্টানাইল তৈরির জন্য অত্যাবশ্যক তিনটি রাসায়নিকের নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থান নেবে।

তার আগে গত বছর প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও জো বাইডেন পুনরায় যৌথ উদ্যোগ শুরু করতে সম্মত হওয়ার পর প্রাণঘাতী ফেন্টানাইল তৈরির জন্য ব্যবহৃত রাসায়নিকের পাচার বন্ধের ক্ষেত্রে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাণিজ্যযুদ্ধ দীর্ঘ মেয়াদে বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষত, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতো দুই বৃহৎ অর্থনীতির মধ্যে এ ধরনের সংঘর্ষ বিশ্ববাণিজ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।

চীনের এ প্রতিক্রিয়ার পর এখন নজর দুই দেশের ভবিষ্যৎ আলোচনার দিকে। অনেকেই আশা করছেন, শিগগিরই সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হবে।