আদানি গোষ্ঠীর ঋণ এক বছরে বেড়েছে ২১ শতাংশ
হিনডেনবার্গ প্রতিবেদনের জেরে ক্ষতবিক্ষত হওয়ার আদানি গোষ্ঠীর ঋণ গত এক বছরে অনেকটাই বেড়েছে। এ সময় আদানি গোষ্ঠীর ঋণ ২১ শতাংশ বেড়েছে। আর বিদেশি ব্যাংকগুলো থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ বেড়েছে এক-তৃতীয়াংশ। যদিও এসব ঋণ হিনডেনবার্গ প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার আগে নেওয়া।
আদানিদের ঋণের পরিমাণ এই মুহূর্তে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি রুপি। সম্প্রতি ব্লুমবার্গের সূত্রে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম এই সংবাদ প্রকাশ করেছে।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলো থেকে নেওয়া আদানি গোষ্ঠীর ঋণ অনেকটা বেড়েছে। এর আগে শুধু ভারতীয় ব্যাংকগুলো থেকেই ঋণ করত তারা। বিদেশি ঋণ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তেমন একটা হয়নি।
চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত আদানি গোষ্ঠীর মোট ঋণের ২৯ শতাংশই বিদেশি। গত সাত বছরেও আদানি গোষ্ঠীকে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরেই অবশ্য আদানি গোষ্ঠীর ঋণ বাড়ছে। ভারতীয় ব্যাংকগুলোতে আদানি গোষ্ঠীর ঋণের পরিমাণ এই মুহূর্তে প্রায় ৩২ শতাংশ। আন্তর্জাতিক ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ ২০১৬ সালের তুলনায় বেড়েছে ১৪ শতাংশ।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান জানিয়েছিলেন, তাদের কাছ থেকে নেওয়া আদানিদের ঋণের পরিমাণ ২৭ হাজার কোটি রুপি। তবে ক্রমবর্ধমান এই ঋণ নিয়ে আদানি গোষ্ঠীর মাথাব্যথা তেমন একটা নেই। আদানি গোষ্ঠীর মুখপাত্র চলতি মাসেও দাবি করেছেন, তাঁদের কোনো কোম্পানি বড় ধরনের ঋণের ঝুঁকিতে নেই।
চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি ছোট এক মার্কিন গবেষণা সংস্থা হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনে প্রকাশিত হওয়ার পর আদানি গোষ্ঠীর সাজানো বাগান লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। শেয়ারবাজারে আদানি গোষ্ঠীর মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর রীতিমতো রক্তপাত হয়েছে। এর জেরে কমছে গৌতম আদানির ব্যক্তিগত সম্পদমূল্য।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের ধনীদের তালিকা অনুসারে, আজ বিকেলে এই প্রতিবেদন লেখার সময় গৌতম আদানির সম্পদমূল্য ছিল ৪৫ দশমিক ৮ বা ৪ হাজার ৫৮০ কোটি ডলার।
২৫ জানুয়ারি ফোর্বসের তালিকায় গৌতম আদানি ছিলেন বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনী। তবে ব্লুমবার্গের তালিকায় তাঁর অবস্থান ছিল চতুর্থ। ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্সের তথ্যানুসারে, ২৫ জানুয়ারি বিকেল ৫টায় তাঁর সম্পদের পরিমাণ ছিল ১১৯ বিলিয়ন বা ১১ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। সেই হিসাবে গত প্রায় তিন মাসে গৌতম আদানির সম্পদমূল্য কমেছে ৭ হাজার ৩২০ কোটি ডলার।
পরিস্থিতি সামাল দিতে একাধিক বড় ঋণ সময়ের আগেই শোধ করেছে আদানি গোষ্ঠী। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে তারা। বড় প্রকল্পের কাজ আপাতত বন্ধ। এতে কিছুটা ধাতস্থ হতে পেরেছে আদানি গোষ্ঠী। কিন্তু তাদের ক্রমবর্ধমান ঋণ মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।