ভারতের রিজার্ভ সাত মাসে সর্বনিম্ন, এক সপ্তাহে কমেছে ৮.৫ বিলিয়ন

ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)সংগৃহীত

ভারতের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসের ধারা অব্যাহত আছে। সর্বশেষ ২০ ডিসেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশটির রিজার্ভ আরও ৮৫০ কোটি ডলার বা ৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন কমেছে; গত এক মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। গত সাত মাসের মধ্যে এটাই ভারতের সর্বনিম্ন রিজার্ভ।

২০ ডিসেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে বিদেশি মুদ্রার পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৬৪৪ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন বা ৬৪ হাজার ৪৩৯ কোটি ডলার।

অন্যান্য সম্পদের নিরিখেও ভারতের রিজার্ভ কমেছে। ২০ ডিসেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে সোনা রিজার্ভের মূল্যমান ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ২৩০ কোটি ডলার হ্রাস পেয়ে ৬৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন বা ৬ হাজার ৫৭০ কোটি ডলার কমেছে। স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস কমেছে ১১ কোটি ২০ লাখ ডলার; কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭৮৮ কোটি ডলার। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফে সংরক্ষিত রিজার্ভ কমেছে ২৩ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৩০ লাখ ডলার কমে দাঁড়িয়েছে ৪২ দশমিক ১৭ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ২১৭ কোটি ডলার।

২৭ ডিসেম্বর শুক্রবার বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের সাপ্তাহিক তথ্য প্রকাশ করেছে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)। বলা হয়েছে, গত এক মাসের মধ্যে এই পতন সর্বাধিক বলে জানিয়েছে আরবিআই। এর আগের দুই সপ্তাহে ৫২০ কোটি ডলার কমেছে; পরপর তিন সপ্তাহ বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ এভাবে কমে যাওয়া চিন্তার কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

এর আগে ২২ নভেম্বরের শেষ হওয়া সপ্তাহে রিজার্ভ পতনের হার ছিল সবচেয়ে বেশি। ওই সপ্তাহে ১ হাজার ৭৮০ কোটি ডলার হারিয়েছিল আরবিআই। রুপির দরপতন ঠেকাতে ক্রমাগত ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৫ হাজার কোটি ডলার বিক্রি করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অক্টোবর মাসে অফশোর মার্কেট ইউনিট বাঁচাতে ৪ হাজার ৯০০ কোটি ডলার হাতছাড়া করেছে আরবিআই।

আরবিআই জানিয়েছে, ডলার বাদ দিয়ে অন্যান্য বিদেশি মুদ্রা সম্পদের অবমূল্যায়নের প্রভাবও বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের পড়েছে। এর জেরে হাতে থাকা বিদেশি মুদ্রার মূল্য ৫৫ হাজার ৬৫৬ কোটি ডলার থেকে কমে ৬০১ দশমিক ৪০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। ডলার শক্তিশালী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউরো, পাউন্ড বা ইয়েনের মতো বিদেশি মুদ্রাগুলোর দরপতন হয়েছে।

গত শুক্রবার ডলারের সাপেক্ষে রুপির ৩ শতাংশ দরপতন হয়েছে। গত সাত মাসের মধ্যে এটাই রুপির সর্বোচ্চ দরপতন। এ নিয়ে টানা ৯ দিন ডলারের তুলনায় রুপির দর কমেছে; এর আগে ডলারের নিরিখে রুপির বড় পতন হয়েছিল ৪ জুন। বছর শেষে ডলারের তুলনায় রুপির দর ৮৬-তে গিয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বিদেশি মুদ্রাভান্ডারের পরিমাণ আরও কমার আশঙ্কা আছে।