বোয়িংয়ের ‘৭৮৭ ড্রিমলাইনার’ নিয়ে কেন তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ
মার্কিন বিমান কোম্পানি বোয়িংয়ের অনিয়ম নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রে বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এফএএ। বোয়িংয়ের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পর সোমবার এই তদন্ত শুরুর কথা জানিয়েছে এফএএ।
বোয়িং এমনিতেই বিপদের মুখে আছে। গত কয়েক বছরে বড় দুটি দুর্ঘটনার পর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তাদের ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের প্যানেল উড্ডয়নের সময় খুলে পড়ে যায়। এই ঘটনায় আরেকটি তদন্ত চলছে। এখন এফএএ জানতে চায়, ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানের পাখা জোড়া দেওয়ার সময় যথাযথভাবে সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে কি না; নাকি বিষয়টি এমন যে কিছু কর্মী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করেই দাবি করেছেন, সবকিছু যথাযথভাবে করা হয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, সম্প্রতি বোয়িংয়ের একজন কর্মী ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমান তৈরির প্রক্রিয়ায় ‘অনিয়ম’ দেখার পর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানান। বোয়িংয়ের একজন ভাইস প্রেসিডেন্ট ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অথোরিটিকে জানায়, বিমান তৈরির সময় যেসব পরীক্ষা করা প্রয়োজন, তার মধ্যে কিছু পরীক্ষা না করেই কয়েকজন কর্মী রেকর্ড বুকে লিখে রেখেছেন, সব পরীক্ষা করা হয়েছে।
এরপরই সোমবার এফএএ জানায়, বোয়িংয়ের এই অনিয়ম নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এফএএ বলেছে, বোয়িংয়ের কারখানায় এখন যতগুলো ৭৮৭ মডেলের বিমান তৈরি হচ্ছে, বোয়িং সেগুলো নতুন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। একই সঙ্গে তাদের পরামর্শ, ৭৮৭ মডেলের যতগুলো বিমান এখন চলাচল করছে, সেগুলোও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এদিকে যন্ত্রাংশের স্বল্পতায় বোয়িংয়ের উৎপাদন কমে গেছে। বর্তমানে তারা মাসে পাঁচটি ৭৮৭ মডেলের ড্রিমলাইনার উৎপাদন করছে।
এদিকে বোয়িং জানিয়েছে, কোম্পানির কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যদিও রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, বোয়িং ঠিক কী ব্যবস্থা নেবে তা পরিষ্কার নয়। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বোয়িংয়ের বিমানের দরজা খুলে পড়ার পর বোয়িংয়ের নিরাপত্তাব্যবস্থা আতশ কাচের নিচে চলে এসেছে।
বোয়িংয়ের উৎপাদনে ত্রুটি আছে—এমন অভিযোগ তোলার পর চলতি বছর দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
বোয়িংয়ের যন্ত্রাংশ উৎপাদনকারী স্পিরিট অ্যারোসিস্টেম ইচ্ছা করে খারাপ যন্ত্রাংশ সরবরাহ করে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন সেখানকার সাবেক কর্মী জোসুয়া ডিন। গত সপ্তাহে ৪৫ বছর বয়সী এই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। হাসপাতাল থেকে তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে শ্বাসকষ্টজনিত রোগের সংক্রমণের কথা বলা হলেও এই ঘটনায় বোয়িংয়ের ওপরে বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মাস দুয়েক আগে আরও এক প্রতিবাদীর এমন অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। জন বার্নেট নামের সেই ব্যক্তি সরাসরি বোয়িংয়েই কাজ করতেন।