ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে রাজনীতি ঢুকবে না: অর্থ উপদেষ্টা

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদফাইল ছবি

ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে রাজনীতি ঢুকবে না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। আজ বুধবার ঢাকায় সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে চলমান কূটনৈতিক সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা মন্তব্যটি করেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক ব্যাপারে রাজনীতি আসছে না। যারা প্রতিযোগিতামূলক মূল্য দেবে, দ্রুত দেবে এবং মানসম্মত পণ্য দেবে, তাদের থেকেই আমরা পণ্য আনব। সেটা ভারত বা বিভিন্ন দেশ হতে পারে। ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলছি। ভিয়েতনামের সঙ্গেও কথা বলছি। এগুলোর ব্যাপারে রাজনীতি ঢুকবে না।’

পশ্চিমবঙ্গের একজন রাজনীতিবিদ বলেছেন, বাংলাদেশে কিছু রপ্তানি করা হবে না, এ ব্যাপারে কূটনৈতিক দেন–দরবার করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সেটা কূটনীতিকরা দেখবেন। ভারতে চাল ও পেঁয়াজ উৎপাদন হয় উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘যখন অতিরিক্ত থাকবে তখন এগুলো তারা কোথায় বিক্রি করবে?’

আগামী রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দামে স্বস্তি থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম একেবারে যে স্থিতিশীল না, সে বিষয়ে আমি সম্মত নই। জিনিসপত্রের দাম কমছে কিছুটা। আজ আমরা চাল ও মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করেছি। দুটিই খাদ্যপণ্য। আগেও আমরা এ ধরনের পণ্য আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছি।’

বাজারে সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে গেছে। তা কীভাবে ও কতটুকু কমিয়ে আনা যায়, সেটি নিয়ে আলাপ চলছে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে আমদানি হচ্ছে। আমরা তো সবকিছুর শুল্ক কমিয়ে দিয়েছি। একটু ধৈর্য ধরুন।’

শুল্ক কমানোর প্রভাব তো পড়ছে না—এমন প্রশ্ন করলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘সেটাই তো আমার জন্য চিন্তার ব্যাপার। সবকিছু তো শূন্য শুল্ক করে দিয়েছি।’

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সরবরাহ ব্যবস্থার ভেতরে অনেক ব্যাপার আছে। এতে বহু লোক জড়িত। পরিবহনের ব্যাপারও আছে। আছে বাজারের ব্যাপার। পণ্য আনলাম, গুদামে রয়ে গেল... সেগুলো তো ভোক্তার কাছে যেতে হবে।’

বাজারে পাঁচ লিটার বোতলের সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এটায় একটু সমস্যা আছে। সয়াবিনের দাম বাইরে অনেক বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, সিন্ডিকেট তো এক জায়গায় না। চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট আছে, পরিবহনে সিন্ডিকেট আছে, রাজনৈতিক সিন্ডিকেটও আছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বর্তমানে বছরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ভারত থেকে বছরে আমদানি হয় ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের পণ্য, বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে সে দেশে রপ্তানি হয় মাত্র ২০০ কোটি ডলারের পণ্য। রপ্তানিতে বাংলাদেশ বরাবরই পিছিয়ে। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে কেবল ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারতে ২ দশমিক ১৩ বিলিয়ন বা ২১৩ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল, যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ৭ শতাংশ বেশি।