রোলেক্সের ১০ কোটি ডলার জরিমানা
বাজারে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ফরাসি সংস্থা বৈশ্বিক ঘড়ি ব্র্যান্ড রোলেক্সের স্থানীয় পরিবেশকদের ১০ কোটি ডলার জরিমানা করেছে। সংস্থাটি বলেছে, দীর্ঘদিন ধরে নিষেধাজ্ঞা বজায় রেখে ফ্রান্সের স্থানীয় খুচরা অনলাইন বিক্রেতাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমানোর দায়ে এ জরিমানা করা হয়েছে।
ব্লুমবার্গের সূত্রে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ফ্রান্সের খুচরা বিক্রেতারা যেন অনলাইনে রোলেক্সের ঘড়ি বিক্রি করতে না পারেন, সে জন্য এক দশক ধরে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে সুইজারল্যান্ডের বিলাসবহুল ঘড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানি রোলেক্সের স্থানীয় কোম্পানি। এ কোম্পানির দাবি ছিল, এ ধরনের অনলাইন নিষেধাজ্ঞা জালিয়াতি প্রতিরোধ ও সমান্তরাল বাণিজ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রয়োজন এবং তা ন্যায়সংগত।
তবে রোলেক্সের এ যুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছে ফ্রান্সের অ্যান্টিট্রাস্ট এজেন্সি। সংস্থাটি মনে করে, এ নিষেধাজ্ঞা খুচরা বিক্রেতাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা সীমাবদ্ধ করেছে। এ কারণে গতকাল মঙ্গলবার ফ্রান্সে রোলেক্সের স্থানীয় ওই পরিবেশকদের ১০ কোটি ডলার জরিমানা করেছে সংস্থাটি।
এক বিবৃতিতে ফ্রান্সের অ্যান্টিট্রাস্ট এজেন্সি বলেছে, দেশটিতে ঘড়িসহ বিলাসবহুল পণ্যের অনলাইন বিক্রি ১৫ বছর ধরে বেড়ে চলেছে। সেখানে এ নিষেধাজ্ঞার ঘটনা অন্য বিপণন চ্যানেল বন্ধ এবং ভোক্তা ও খুচরা বিক্রেতাদের ক্ষতি করছে। ফলে ঘটনাটি বেশ গুরুতর।
জরিমানার আদেশের সঙ্গে আরও কিছু নির্দেশনা দিয়েছে ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে রয়েছে, রোলেক্সের ফরাসি ইউনিটের খুচরা বিক্রেতাদের জরিমানার এ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অবহিত করা। এ বিষয়ে একটি সারসংক্ষেপ আগামী দুই মাসের মধ্যে এবং টানা সাত দিন ধরে রোলেক্সের ফ্রান্স ইউনিটের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
বিশ্বে বিলাসবহুল হাতঘড়ির জগতে সুপরিচিত নাম রোলেক্স। ১৯০৫ সালে যাত্রা শুরু করা কোম্পানিটি বিশ্বে প্রথম ওয়াটারপ্রুফ বা পানিরোধী ঘড়ি প্রস্তুত করে। রোলেক্সের দামি ঘড়িগুলো কোটি টাকার ওপরে। সবচেয়ে কম দামি ঘড়িটির দামও বাংলাদেশি মুদ্রায় দুই লাখ টাকার বেশি। ধনী ও অভিজাত পরিবারের সদস্য ছাড়াও গলফ, টেনিস, মোটর স্পোর্টসসহ ক্রীড়া ও বিনোদনজগতে রয়েছে রোলেক্সের ব্যাপক ব্যবহার।
রোলেক্সের সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। তবে বর্তমানে বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশে রোলেক্সের ৪ হাজারের বেশি ঘড়ির কারিগর এবং ১ হাজার ৮০০-এর বেশি অনুমোদিত খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
প্রতিবছর প্রায় আট লাখ রোলেক্স ঘড়ি তৈরি হয়। সব মিলিয়ে বর্তমানে ব্র্যান্ডটির সম্পদমূল্য ৭৯০ কোটি মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮৫ হাজার ৩২০ কোটি টাকা। তবে রোলেক্স তার নিয়ন্ত্রিত উৎপাদন ও বিতরণ প্রক্রিয়ার জন্য পরিচিত, অর্থাৎ তারা ঘড়ি উৎপাদনের ক্ষেত্রে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্য রাখে।